শুভব্রত মুখার্জি:- লর্ডসে রবিবার মহিলাদের দ্য হান্ড্রেডের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল লন্ডন স্পিরিট এবং ওয়েলশ ফায়ার। এই ম্যাচে জিতলে প্রথমবার দ্য হান্ড্রেডের শিরোপা জয়ের স্বাদ পেত লন্ডন স্পিরিট। আর সেই অসাধ্য সাধন করে দেখালেন ভারতীয় অলরাউন্ডার দীপ্তি শর্মা। তিন বলে জয়ের জন্য যখন চার রান বাকি, সেই সময়েই এক বিরাট ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে এনে দিলেন এক অবিশ্বাস্য জয়। যে শহরের দলকে তিনি জয় এনে দিলেন, সেই শহরেরই ভিলেন ছিলেন তিনি। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ঝুলন গোস্বামীর বিদায়ি ম্যাচে ইংল্যান্ডের শেষ ব্যাটারকে নন-স্ট্রাইকার এন্ডে রান-আউট করেছিলেন। তা নিয়ে স্পিরিটের ক্লাস শুরু করেছিলেন ইংরেজরা। যে বিষয়টা আইনে বৈধ ছিল।
রবিবাসরীয় দুপুরে লন্ডনবাসী এক রুদ্ধশ্বাস ম্যাচের সাক্ষী থাকলেন। যার পরতে-পরতে মিশে ছিল যেন রহস্য রোমাঞ্চ গল্পের উত্তেজনা। হেইলি ম্যাথিউসের বলে দীপ্তির মারা শট যখন বাউন্ডারির দড়ি পেরিয়ে যায়, তখন পরিসমাপ্তি ঘটেছে এই থ্রিলারের। প্রথমবার মেয়েদের দ্য হান্ড্রেড চ্যাম্পিয়ন হল লন্ডন। সেই জয়ে ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিলেন ভারতীয় অলরাউন্ডার।
ভারত তথা বাংলার অলরাউন্ডার দীপ্তি শর্মা ছয় মেরে ম্যাচ শেষ করতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে লন্ডন স্পিরিটের ডাগ-আউট। ছুটে মাঠের মধ্যে প্রবেশ করেন লন্ডন স্পিরিটের ক্রিকেটাররা। জড়িয়ে ধরেন দীপ্তিকে। গ্যালারিতে উল্লাসে ফেটে পড়তে দেখা যায় লন্ডন স্পিরিটের সমর্থকদের।
অসম্ভব চাপের মুহূর্তেও নিজের নাভ ধরে রেখে মাথা ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ ফিনিশ করায় দীপ্তি শর্মাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলেই। মেয়েদের দ্য হান্ড্রেড টুর্নামেন্টের ফাইনালে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন লন্ডন স্পিরিটের অধিনায়ক হিথার নাইট। প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ১০০ বলে ৮ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান করতে সমর্থ হয় ওয়েলস ফায়ার। ওয়েলসের হয়ে জেস জোনাসন অর্ধশতরান করেন। তিনি ৪১ বলে করেছেন ৫৪ রান। এছাড়াও অধিনায়ক ট্যামি বিউমন্ট ২১ এবং হেইলি ম্যাথিউস করেছেন ২২ রান। লন্ডনের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন সারাহ গ্লেন এবং এভা গ্রে। দীপ্তি শর্মা ২০ বলে ২৩ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছেন।
রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে যায় লন্ডন। অধিনায়ক তথা ওপেনার মেগ ল্যানিংয়ের উইকেট হারায় লন্ডন স্পিরিট। মাত্র চার রান করে আউট হন তিনি। তবে অপর ওপেনার জর্জিয়া রেডমাইনি ৩২ বলে ৩৪ রান করে দলকে কিছুটা স্থিরতা দেন। এছাড়াও অধিনায়ক হিথার নাইট ২৪ রান করেছেন। মাত্র ৯ বলে ২২ রান করে ম্যাচের রঙ পাল্টে দেন ড্যানিয়েলা গিবসন।
কিন্তু পরপর উইকেট হারিয়ে একটা সময়ে লন্ডনের অবস্থা দাঁড়ায় ১১০ রানে ছয় উইকেট। ফলে চাপ বাড়তে থাকে লন্ডন স্পিরিটের উপরে। এই সময় শেষ তিন বলে ৪ রান প্রয়োজন ছিল লন্ডন স্পিরিটের। এই সময়েই অফস্পিনার তথা ওয়েস্ট ইন্ডিজের অলরাউন্ডার হেইলি ম্যাথিউসের বলটি একেবারে ব্যাটে বলে কানেক্ট হয়ে যায় দীপ্তির। একটি বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে প্রথমবার দ্য হান্ড্রেডে চ্যাম্পিয়ন করেন দীপ্তি।