দ্য হান্ড্রেড ২০২৫-এর প্লেয়ার ড্রাফট গতকাল (১২ মার্চ) অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে, এখানে কোনও পাকিস্তানি খেলোয়াড় দল পাননি। মহিলা ড্রাফটে পাঁচজন এবং পুরুষ ড্রাফটে ৪৫ জন পাকিস্তানি খেলোয়াড় নাম জমা করেছিলেন। মহিলাদের লিগে বিদেশি স্লটে একাধিক বিকল্প থাকার কারণে আলিয়া রিয়াজ, ফাতিমা সানা, ইউসরা আমির, ইরাম জাভেদ এবং জাওয়েরিয়া রউফ দলে জায়গা না পাওয়াটা খুব একটা অপ্রত্যাশিত ছিল না।
তবে পুরুষদের ড্রাফটে কোনও পাকিস্তানি ক্রিকেটার দল পাওয়ায় অনেককে অবাক করেছে। বিশেষ করে যখন বেশ কয়েকটি বিদেশি স্লট খালি ছিল। দ্য হান্ড্রেড-এর বেসরকারিকরণ কি পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের উপেক্ষার কারণ?
এই মরশুমে দ্য হান্ড্রেড-এর কাঠামোতে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। যেখানে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ECB) প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজিতে বাইরের বিনিয়োগ আহ্বান করা হয়েছিল। আটটি ফ্র্যাঞ্চাইজির সবকটিতেই বাইরে থেকে বিনিয়োগ এসেছে। এর মধ্যে চারটি দলে IPL মালিকদের অংশীদারত্ব দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন … এটা যেন একটা জঙ্গল… CT 2025-তে পাকিস্তানের ব্যর্থতার পরে প্রাক্তন পাক কোচের গলায় PCB-র কড়া সমালোচনা
IPL এবং পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই জটিল। ২০০৮ সালে মুম্বই হামলার পর পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের IPL-এ খেলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে ওয়াসিম আক্রম এবং রমিজ রাজার মতো ব্যক্তিরা কোচিং ও ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায় ছিলেন।
২০২৩ সালে শুরু হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার SA20 লিগের ছয়টি দলই IPL মালিকানাধীন, এবং এখন পর্যন্ত কোনও পাকিস্তানি খেলোয়াড় সেখানে সুযোগ পাননি। তাই IPL মালিকদের দ্য হান্ড্রেড-এ বিনিয়োগের কারণে পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের উপর আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। তবে ECB চেয়ারম্যান রিচার্ড গোল্ড গত মাসে জানিয়েছিলেন, পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণে কোনও বাধা আসবে না। তবুও, ড্রাফটের পর এই ‘সফট’ নিষেধাজ্ঞার গুঞ্জন আরও বেড়েছে।
আরও পড়ুন … AFC Challenge League 2025: ইস্টবেঙ্গলের লোগো বিতর্ক! এএফসি-তে ‘SC East Bengal’
দ্য হান্ড্রেড-এর চার মরশুমে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব তেমন শক্তিশালী ছিল না। সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন উসামা মির – ২০২৩ ও ২০২৪ সালে ম্যাঞ্চেস্টার অরিজিনালসের হয়ে ১৩টি ম্যাচ। এছাড়া হ্যারিস রউফ (১২), ইমাদ ওয়াসিম (১০), মহম্মদ আমির (৬), শাহিন শাহ আফ্রিদি (৬), মহম্মদ হাসনাইন (৫), জামান খান (৫), শাদাব খান (৩), এবং ওয়াহাব রিয়াজ (২) ম্যাচ খেলেছেন।
পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক সূচির সাথে দ্য হান্ড্রেড ২০২৫-এর সংঘর্ষ। তবে পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের দল না পাওয়ার আসল কারণ আরও বাস্তবসম্মত – তাদের প্রাপ্যতা নিয়ে বড় অনিশ্চয়তা রয়েছে।
আরও পড়ুন … হার্দিক কি ওভাররেটেড প্লেয়ার? প্রাক্তন পাক অলরাউন্ডারের সঙ্গে পান্ডিয়ার তুলনা টানলেন আখতার-হাফিজ
ICC-এর ফিউচার ট্যুরস প্রোগ্রাম (FTP) ২০২৩-২৭ অনুযায়ী, পাকিস্তান জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ থেকে মধ্য অগস্ট পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে। এরপরই আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে দেশে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ রয়েছে, যা এশিয়া কাপের (সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ) আগে অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও, পাকিস্তান এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ সিরিজের জন্য আলোচনায় রয়েছে।
অন্যদিকে, দ্য হান্ড্রেড ২০২৫ চলবে ৫ অগস্ট থেকে ৩১ অগস্ট পর্যন্ত, যা পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক সূচির সঙ্গে প্রায় পুরোপুরি মিলে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই, কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি এমন খেলোয়াড়দের নিতে চায়নি যারা জাতীয় দলে ডাক পেলে টুর্নামেন্ট ছেড়ে চলে যেতে পারেন। গত মরশুমেও প্লেয়ারদের সরে যাওয়া নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো সমস্যায় পড়েছিল। পাকিস্তানি পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি দ্য হান্ড্রেড থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর কথা বলেছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে তিনি কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টিতে খেলার চুক্তি করেন, যা দ্য হান্ড্রেড-এর সঙ্গে মিলে যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (PCB) তাকে সেখানে খেলতে অনাপত্তি পত্র (NOC) দেয়নি।