চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তান হতাশাজনক পারফরম্যান্স করেছে। ইতিমধ্যে সুপার আটের লড়াই থেকেও তারা ছিটকে গিয়েছে। গ্রুপ পর্বের পরপর দুই ম্যাচ হেরে, পাকিস্তানের অঙ্ক এমনি জটিল হয়ে গিয়েছিল। আর শুক্রবার আয়ারল্যান্ড-আমেরিকা ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ার পর তাদের সুপার আটে ওঠার সব আশা শেষ হয়ে গিয়েছে। আর পাক ব্রিগেডের এই হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর দলের অভ্যন্তরে গ্রুপবাজি, সিনিয়র খেলোয়াড়দের খারাপ পারফরম্যান্সকেই মূলত দায়ী করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র দলের মধ্যেই নয়, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসতে পারে।
পিসিবি সূত্রে জানা গিয়েছে যে, অধিনায়ক হিসেবে ফিরে আসার পর বাবর আজমের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল দলকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসা। কিন্তু এই অভ্যন্তরীণ ঝামেলা এবং গ্রুপবাজির কারণে তিনি সেই কাজে সফল হননি। আসলে শাহিন শাহ আফ্রিদি অধিনায়কত্ব হারানোর জন্য অসন্তুষ্ট ছিলেন এবং বাবরের বিরুদ্ধে ছিলেন তিনি। অন্য দিকে মহম্মদ রিজওয়ানকে অধিনায়ক হিসেবে বিবেচনা না করায় জন্য অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: ভারতের কোচের পদটা পুরো আলাদা- দ্রাবিড়ের সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে গম্ভীরকে নিয়ে বড় দাবি কুম্বলের
টিমে তিনটি গ্রুপ
দলের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র পিটিআই-কে বলেছেন, ‘টিমে তিনটি গ্রুপ রয়েছে, একটি বাবর আজমের, দ্বিতীয়টি শাহিন শাহ আফ্রিদির এবং তৃতীয়টি মহম্মদ রিজওয়ানের। এর সঙ্গে যোগ করুন, মহম্মদ আমির এবং ইমাদ ওয়াসিমের মতো সিনিয়রদের ফিরে আসা- সব মিলিয়েই বিশ্বকাপে বিপর্যয় ঘটেছে।’
আরও পড়ুন: জয়ের হ্যাটট্রিক করে সুপার আটে ভারত, তবে কোহলি-রোহিতদের ব্য়াটিং নিয়ে কিন্তু চিন্তা থেকেই গেল
ইমাদ এবং আমিরের প্রত্যাবর্তন
সেই সূত্র আরও দাবি করেছেন, ‘ইমাদ এবং আমিরের প্রত্যাবর্তন বিভ্রান্তি বাড়িয়ে দেয়। কারণ বাবর ওদের দু'জনের থেকে কোনও ভালো পারফরম্যান্স পায়নি। কারণ ওরা এখন ফ্র্যাঞ্চাইজি ছাড়া দীর্ঘ দিন ধরে শীর্ষ-স্তরের ঘরোয়া ভিত্তিক লিগ বা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেনি। এমন কী এমন ঘটনাও ঘটেছে যে, কিছু খেলোয়াড় একে অপরের সঙ্গে কথাও বলত না। এবং তাদের মধ্যে আবার দলের সব গ্রুপের নেতাদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেছিলেন।’
আরও পড়ুন: ৪-৯-৪- দুরন্ত বোলিং ফিগার আর্শের, ইতিহাস গড়ে ভাঙলেন অশ্বিনের ১০ বছর আগের রেকর্ড
নকভি আগে থেকেই জানতেন
পিসিবির একজন সিনিয়র কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন যে, চেয়ারম্যান মহসিন নকভি বিশ্বকাপের আগেও দলের সমস্যা সম্পর্কে অবগত ছিলেন, কারণ তাঁকে জাতীয় নির্বাচক এবং সিনিয়র ম্যানেজার ওয়াহাব রিয়াজ সবটা জানিয়েছিলেন। সেই কর্মকর্তার দাবি, ‘নকভি সমস্ত খেলোয়াড়ের সঙ্গে একান্তে দু'টি বৈঠক করেছিলেন এবং তাদের সমস্যাগুলিকে একপাশে রেখে বিশ্বকাপ জয়ের দিকে মনোনিবেশ করতে বলেছিলেন। সেই সঙ্গে তাদের পেপ টক দিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন, এই সমস্যাুলির সমাধান পরে করবেন তিনি। কিন্তু তাঁর পেপটক কার্যকর হয়নি।’
সেই সূত্রের মতে, ‘আমি বাবরকে ডিফেন্ড করছি না। তবে যখন আপনার প্রধান বোলার শেষ ওভারে দুর্বল মার্কিন দলের বিপক্ষে ১৫ রানও ডিফেন্ড করতে না পারে, তবে অধিনায়কের কী করা উচিত? অথবা যখন একজন অলরাউন্ডারকে বিশ্বকাপ জিততে সাহায্য করার জন্য অবসর ভাঙিয়ে নিয়ে আসা হয় এবং তিমি ফিটনেস সমস্যা নিয়ে বসে থাকে, তবে কী হবে?’ নকভি পরামর্শ দিয়েছেন যে, তিনি জাতীয় দলে পরিবর্তন আনতে পারেন। তবে সূত্রের ইঙ্গিত, ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যেও পরিবর্তন আসতে পারে।