ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়দের মধ্যে অন্যতম যুবরাজ সিং। ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন তিনি। ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময়ে স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে এক ওভারে ছয়টি ছক্কা মেরে তিনি শিরোনামে উঠে এসেছিলেন। ২০১১ বিশ্বকাপে তিনি প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে একই ম্যাচে পাঁচ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন। প্রতিযোগিতায় তিনি ৯টি ম্যাচে ৯০.৫০ গড়ে ৩৬২ রান করেছিলেন। পাশাপাশি বল হাতে ৫.০২ ইকোনমি রেটে ১৫ উইকেট নিয়েছিলেন। যুবরাজ বিশ্বকাপের প্লেয়ার অফ দ্য টুর্নামেন্ট নির্বাচিত হন। ২০১১ বিশ্বকাপের পর যুবরাজের বাম ফুসফুসে ক্যানসার ধরা পড়ে এবং কেমোথেরাপি চলে। একটি দীর্ঘ যুদ্ধের পর, তিনি ডিসেম্বর ২০১২ সালে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন কিন্তু সেই সময় তাঁর পারফরম্যান্স ভালো ছিল না। সেই কারণে তাঁকে ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য ভারতীয় দলে নেওয়া হয় না।
যখন বিরাট কোহলি অধিনায়ক হন, যুবরাজ আরেকটি প্রত্যাবর্তন করেন এবং তারপরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খারাপ প্রদর্শনের পর অবশেষে বাদ পড়েন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে, প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার রবিন উথাপ্পা, কোহলির অধিনায়কত্বকে রোহিত শর্মার সঙ্গে তুলনা করার সময় ক্যানসার থেকে যুবরাজের প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে মুখ খোলেন। তিনি বলেন, ‘যুবি পা-এর উদাহরণ নিন। লোকটি ক্যানসারকে পরাজিত করেছে, এবং সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে আসার চেষ্টাও করেছে। ও সেই ব্যক্তি যে আমাদের একটি ওডিআই বিশ্বকাপ জিতিয়েছে, মোট দুটি বিশ্বকাপ জিতেছে। আমাদের জয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে সে। আর এরকম পরিস্থিতিতে তুমি যখন অধিনায়ক হলে এবং বললে তার ফুসফুসে জোর কমে গেছে! এমনকি যখন তুমি তাকে লড়াই করতে দেখেছ। আমায় কেউ এগুলি বলেনি। এগুলি নিজেই দেখেছি। তুমি অধিনায়ক যখন হলে তখন তাকে লড়াই করতে দেখেছ। আমি মানছি তোমায় দলের একটা মান বজায় রাখতে হয়। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই একটা ব্যতিক্রম রয়েছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘সে এমন একজন ব্যক্তি যে ব্যতিক্রম হওয়ার যোগ্য। কারণ, ও শুধু টুর্নামেন্ট জিতিয়েছে এমন না, সে ক্যানসারকে পরাজিত করেছে। সেই অর্থে জীবনের কঠিনতম চ্যালেঞ্জকে হার মানিয়েছে।’ উথাপ্পা অভিযোগ করেছেন যে যুবরাজকে পর্যাপ্ত সুযোগ দেননি বিরাট কোহলি। এমনকি ২ বার কোহলির কাছে ফিটনেস টেস্টে ছাড় দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিল যুবরাজ, কিন্তু তা খারিজ করে দেন বিরাট। উথাপ্পা বলেন, ‘যুবি যখন দু’বার ছাড় দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিল, তখন তাকে তা দেওয়া হয়নি । তারপরে সে পরীক্ষা দিয়েছিল। সে ফিটনেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়, দলে সুযোগ পায়। তবে খুব ভালো কিছু করে দেখাতে পারেনি। এরপরেই দল থেকে পাকাপাকি ভাবে বাদ পড়ে সে। যারাই সেই সময় লিডারশিপ গ্রুপে ছিল, তারা তাকে পাত্তা দেয়নি। সেই সময় অধিনায়ক ছিল বিরাট। তখন তার নির্দেশ অনুসারে সব চলতো। তার একটা দৃঢ় ব্যক্তিত্ব ছিল।’