প্রথমবার আরব সাগরকে সাক্ষী রেখে বিশ্বকাপ হাতে ছবি তুললেন রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি। আর যে কায়দায় বিরাট সেই ছবিটা তুলতে বলেন, তাতে আপ্লুত হয়ে গিয়েছেন নেটিজেনরা। কারণ মেরিন ড্রাইভ থেকে ভিকট্রি প্যারেড করে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে যাওয়ার পথে বাসের সামনে থেকে বাকিদের সরিয়ে দেন বিরাট। তারপর ডেকে দেন টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ককে। প্রথমবার মেরিন ড্রাইভকে সাক্ষী রেখে দু'জনে মিলে হাতে বিশ্বকাপ ধরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে থাকেন। সেই ছবিটাও তুলতও বলেন বিরাট। আর সেই মুহূর্তের ছবি এবং ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। ওটা ভারতীয় ফ্যানদের কাছে নেহাতই একটা মুহূর্ত নয়। ওই মুহূর্তটা ভারতীয় ফ্যানদের কাছে একটা মহাকাব্য, আবেগের বিস্ফোরণ, ব্রোম্যান্সের মুহূর্ত।
প্রথমবার একসঙ্গে বিশ্বকাপ জয় রোহিত এবং বিরাটের
রোহিত এবং বিরাট দীর্ঘদিন ধরে একসঙ্গে খেললেও কখনও একসঙ্গে হাতে বিশ্বকাপ তুলতে পারেননি। সচিন তেন্ডুলকর-পরবর্তী যুগের ভারতের দুই সেরা ব্যাটার আগে কখনও একসঙ্গে বিশ্বকাপ জেতেননি। ২০০৭ সালে যখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিলেন রোহিত, তখন টিম ইন্ডিয়ার সিনিয়র দলের ধারেকাছেও ছিলেন না বিরাট। আবার ২০১১ সালে যখন ওয়াংখেড়েতে বিরাট ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ জিতেছিলেন, তখন সেই দলে ছিলেন না রোহিত।
দু'জনে মিলে একটিই আইসিসি ট্রফি জিতেছিলেন। ২০১৩ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ী দলের সদস্য ছিলেন রোহিত এবং বিরাট। তারপর থেকে দু'জনে একসঙ্গে একাধিক বিশ্বকাপ খেলেছেন। কিন্তু বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পাননি। সবথেকে কাছে এসেছিলেন ২০২৩ সালের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে। কিন্তু একটা খারাপ দিন সেই স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছিল। চুরমার হয়ে গিয়েছিল স্বপ্ন। কিন্তু ২০২৪ সালের ২৯ জুন স্বপ্নভঙ্গ হতে দেননি তাঁরা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছেন রোহিত এবং বিরাট। পূরণ হয়েছে স্বপ্ন।
রোহিত ও বিরাটের ব্রোম্যান্স
আর তারপর থেকে বিরাট প্রকাশ্যে একাধিকবার বলেছেন যে তাঁরা কীভাবে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখে এসেছেন। বিশ্বকাপ নিয়ে যখন কথা বলতেন তাঁরা, তখন একে অপরকে বলতেন যে একটি বিশ্বকাপ জিততেই হবে। সেই দলের অধিনায়ক কে হবেন, কে সিনিয়র খেলোয়াড় হবেন, তাতে কোনও যায় আসে না। কারণ জিতবে ভারত। জিতবেন রোহিত। জিতবেন বিরাট। জিতবেন ভারতের ১৪০ কোটি মানুষ।
‘থ্যাঙ্ক ইউ রোহিত, থ্যাঙ্ক ইউ বিরাট’
বৃহস্পতিবার ওয়াংখেড়েতে বিরাট ঠিক কথাটাই সেটা বলেন। তিনি জানান, কে অধিনায়কত্ব করছেন, সেটা নিয়ে কোনওদিনই মাথাব্যথা ছিল না। তিনি যখন অধিনায়ক ছিলেন, দলের সিনিয়র ক্রিকেটার ছিলেন রোহিত। আবার রোহিত যখন ক্যাপ্টেন, তখন তিনি দলের সিনিয়র ক্রিকেটার। তাঁরা একে অপরের পরিপূরক। তাঁরা একে অপরের আবেগ, তাঁরা একে অপরের সহযোদ্ধা, যে যুদ্ধটা তাঁরা এক দশকের জন্য করে এসেছেন ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য। আর তাই তো এতদিনের অপেক্ষার পরে যখন দুই তারকা প্রথমবার মেরিন ড্রাইভকে সাক্ষী রেখে হাতে বিশ্বকাপ তুললেন, তখন একটা কথাই বলতে হয়, ‘থ্যাঙ্ক ইউ রোহিত, থ্যাঙ্ক ইউ বিরাট।’