এজবাস্টন টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে দারুণ ছন্দে ছিলেন ভারতীয় পেসার আকাশ দীপ। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জসপ্রীত বুমরাহকে বিশ্রাম দেওয়ার পর সুযোগ পাওয়া এই পেসার রীতিমতো আগুন ঝরান। চতুর্থ দিনের শেষে ইংল্যান্ড ৭২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে রয়েছে। এই দিন আকাশ দীপ তুলে নিয়েছিলেন তিনটির মধ্যে দুটি উইকেট। এবং দুটিই উইকেট নিয়েছেন বোল্ড করে! বিশেষ করে জো রুটকে যেভাবে আউট করেন, তা দেখে হতবাক হয়ে যায় ক্রিকেটবিশ্ব।
এমনিতেই জো রুটের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটারকে বল দিয়ে পরাস্ত করা খুব সহজ নয়। কিন্তু আকাশ দীপের ইনসুইং ডেলিভারি পুরোপুরি রুটকে বিভ্রান্ত করে। যদিও এই আউটের পরে শুরু হয় ‘নো বল বিতর্ক।’
যদিও মাঠের আম্পায়ার রুটকে আউট ঘোষণা করেন, কিন্তু কমেন্টেটর ও সোশ্যাল মিডিয়ার একাংশ দাবি করতে শুরু করেন — আকাশের বলটি নাকি ‘অবৈধ’ ছিল। প্রাক্তন ইংল্যান্ড ক্রিকেটার অ্যালিসন মিচেল, BBC TMS-এ ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে বলেন, ‘আকাশ দীপ ডেলিভারি করার সময় ক্রিজের অনেক বাইরের দিক থেকে বল করছিলেন। তার পিছনের পা প্রায় দুই ইঞ্চির মতো রিটার্ন ক্রিজ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ফলে বলটি আইন অনুযায়ী নো বল হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু সেটা ধরা পড়েনি।’
এখানে বলে রাখা ভালো, আকাশের সামনের পা পপিং ক্রিজের ভিতরে থাকলেও, অভিযোগ উঠেছে তার পিছনের পা 'রিটার্ন ক্রিজ' স্পর্শ করেছে। আর এই কারণেই একাংশের ভক্তরা রীতিমতো ক্ষুব্ধ আম্পায়ারদের উপর।
তাহলে নিয়ম কী বলছে? (MCC আইন 21.5.1 অনুযায়ী):
১) ‘একটি বৈধ বলের জন্য, বোলারের ডেলিভারি স্ট্রাইডে পিছনের পা রিটার্ন ক্রিজের মধ্যে পড়তে হবে এবং সেটি রিটার্ন ক্রিজ স্পর্শ করা চলবে না।’
২) ‘সামনের পা পপিং ক্রিজের পিছনে পড়তে হবে বা তার উপর থাকা চলবে, এবং এটি মিডল স্টাম্পকে সংযুক্তকারী কাল্পনিক লাইনের একই পাশে থাকতে হবে।’
তাহলে আকাশ দীপের বল কি নো বল ছিল?
এই প্রশ্নের উত্তরে ভারতের প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রী, যিনি সেই সময় ধারাভাষ্য বক্সেই ছিলেন, বলেন, ‘আকাশের পিছনের পা রিটার্ন ক্রিজের মধ্যে ছিল, তাই বলটি সম্পূর্ণ বৈধ।’ এই অবস্থায় বিতর্ক থাকলেও, মাঠের আম্পায়ার ও তৃতীয় আম্পায়ার নো বল হিসেবে বিবেচনা করেননি, এবং রুটের আউটকে বৈধ বলেই ধরা হয়েছে।
উল্লেখ্য, জো রুটের জন্য এই টেস্ট ছিল একেবারেই ভুলে যাওয়ার মতো। প্রথম ইনিংসে ৪৬ বল খেলে করেছিলেন মাত্র ২২ রান, দ্বিতীয় ইনিংসে আরও খারাপ — মাত্র ৬ রানে বোল্ড হয়ে ফেরেন আকাশ দীপের বলে। এই ঘটনা নিয়ে বিতর্ক হলেও, ভারতের তরফে আকাশ দীপের পারফরম্যান্স দারুণ প্রশংসিত হয়েছে। এবং ক্রিকেটবিশ্ব আবারও মনে করিয়ে দিল, পা-এর অবস্থানেই বদলে যেতে পারে পুরো ম্যাচের গতিপথ।