চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে রোহিত শর্মা ব্রিগেড ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফের ভারতকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে বিশ্ব জয়ের। ফের আইসিসি-র খরা কাটানোর। এই ইংরেজদে ব্রিগেডের বিরুদ্ধে ২০২২ সংস্করণের সেমিতে ১০ উইকেটে লজ্জার পরাজয় বরণ করে ছিটকে গিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। বৃহস্পতিবার সেই বদলা যেমন পূরণ করতে পেরেছে ভারত, তেমনই বিশ্ব জয়ের আশায় বুক বেঁধেছে ভারতবাসীও। শনিবার (২৯ জুন) টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবেন রোহিতরা। পারবে টিম ইন্ডিয়া এক দশকেরও বেশি সময় পরে আইসিসি-র ট্রফির খরা কাটাতে?
আরও পড়ুন: এটা কোহলির খেলার স্টাইলই নয়… বাজে শট খেলে বিরাট আউট হওয়ায় তীব্র সমালোচনা শাস্ত্রীর
২০২২ সালে ২০ ওভারের বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে হেরে যাওয়ার পর রোহিত অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান দিনেশ কার্তিককে বলেছিলেন যে, এই দলটির একটি ‘পরিবর্তন’ দরকার। সেই পরিবর্তনটাই কিন্তু রোহিত শর্মার টিমের মধ্যে ধীরে ধীরে চোখে পড়ছে। হয়তো ২০২৩ ওডিআই বিশ্বকাপে ফাইনালে পৌঁছানোর পরেও, ভারত জিততে পারেনি। কিন্তু সেই বিশ্বকাপে টানা ১০টি ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছিল টিম ইন্ডিয়া। তাও দাপটের সঙ্গে, আগ্রাসী মেজাজে। এবার টি২০ বিশ্বকাপেও বেশ টের পাওয়া যাচ্ছে টিম ইন্ডিয়ার পরিবর্তন। পুরো আকাশ-পাতাল তফাৎ ২০২২ সালের ২০ ওভার বিশ্বকাপের থেকে।
শুধু টিম ইন্ডিয়া বলে নয়, রোহিত যেন নিজেকেও একেবারে পাল্টে ফেলেছে। ২০২২ সালের টি২০ বিশ্বকাপের যে শটগুলো ঠিক করে খেলতেই পারেননি হিটম্যান, সেগুলি এবার অবলীলায় বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়েছেন। রোহিত এমনিতেই দাবি করে আসছিলেন, নিজের খেলা এবং দৃষ্টিভঙ্গিতে তিনি পরিবর্তন আনছেন। সেই আত্মবিশ্বাসের ছোঁয়া কিন্তু রোহিতের খেলায় পাওয়া যাচ্ছে। একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ২০২২ এবং ২০২৪ টি২০ বিশ্বকাপের সেমির ম্যাচে রোহিতের খেলার মূল্যায়ন এবং পার্থক্যগুলো স্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়েছে। নিজেরাও সেই ভিডিয়ো দেখলে পার্থক্যটা ভালো ভাবেই বুঝতে পারবেন। ২০২২ সালে দীনেশ কার্তিককে যা বলেছিলেন রোহিত, বাস্তবে পুরোপুরি রুপ দিয়েছেন ২০২৪-এ এসে।
সুপার আটে নিজেদের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দুরন্ত ৯২ রান করার পর, বৃহস্পতিবার সেমিফাইনালেও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হাফসেঞ্চুরি হাঁকান রোহিত। ৩৯ বলে ৫৭ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেন তিনি। দুই দলের ব্যাটারদের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। ৬টি চার এবং ২টি ছক্কা ছিল তাঁর এই ইনিংসে। আর রোহিতের এই হাফসেঞ্চুরিই ভারতের জন্য অক্সিজেন হয়।
রোহিতের হাফসেঞ্চুরি ছাড়া এদিন ৩৬ বলে ৪৭ করেছেন সূর্যকুমার যাদব। ১৩ বলে ২৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছেন হার্দিক পান্ডিয়া। শেষ পাতে ৯ বলে অপরাজিত ১৭ রান করেন রবীন্দ্র জাদেজা এবং ৬ বলে ১০ করেন অক্ষর প্যাটেল। যা ভারতকে নির্দিষ্ট ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭১ রানে পৌঁছতে সাহায্য করে। সেই রান তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ড ১০৩ রানে গুটিয়ে যায়। হ্যারি ব্রুকের ১৯ বলে ২৫, বাটলারের ১৫ বলে ২৩, জোফ্রা আর্চারের ১৫ বলে ২১, লিয়াম লিভিংস্টোনের ১৬ বলে ১১- এই হল ইংল্যান্ডের ব্যাটারদের মধ্যে দুই অঙ্কের ঘরের স্কোর। বাকিরা তো এক অঙ্কেই গড়াগড়ি খেয়েছেন। আর ভারত ৬৮ রানে জিতে ফাইনালে ওঠে।