তুলনায় ছোট দল বলে বিশ্বকাপের মঞ্চে বহির্বিশ্বের তেমন একটা সমর্থন পায়নি আফগানিস্তান। তবে একের পর এক বড় দলকে হারানোর পরে অভিনন্দনের বন্যায় ভাসতে থাকেন রশিদ খানরা। আফগানিস্তান আক্ষরিক অর্থেই চলতি টি-২০ বিশ্বকাপে জায়ান্ট কিলার হয়ে দেখে দেয়। তারা গ্রুপ লিগে হারিয়ে দেয় নিউজিল্যান্ডকে। এবার সুপার এইট রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশকে পরাজিত করে ইতিহাস গড়েন রশিদরা। প্রথমবাররে মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে আফগান ক্রিকেট ইতিহাসের নতুন অধ্যায় রচনা করেন তাঁরা।
মঙ্গলবার সুপার এইট রাউন্ডের ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠার পরে রশিদ খান স্পষ্ট জানান যে, কেমন একটা অবিশ্বাসের বাতাবরণে রয়েছেন তাঁরা। তবে সেই সঙ্গে আফগান দলনায়ক চমকপ্রদ একটি গল্পও শোনান পুরস্কার বিরতণী মঞ্চে।
রশিদ জানান যে, তাঁরা নিজেদের ক্ষমতার উপরে যতটা না আস্থা রেখেছিলেন, তার থেকেও বেশি তাঁদের উপরে আস্থা দেখিয়েছিলেন একজন মাত্র ব্যক্তি। তিনি অন্য কেউ নন, স্বয়ং ব্রায়ান লারা। ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তিই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি অফগানিস্তান সেমিফাইনালে উঠবে বলে দাবি করেছিলেন।
রশিদ বলেন, ‘মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছি। যেভাবে আমরা টুর্নামেন্ট শুরু করি, নিউজিল্যান্ডকে হারানোর পরেই নিজেদের উপর বিশ্বাস দৃঢ় হয়। তবে সত্যি বলতে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওঠা অবিশ্বাস্য বিষয়। নিজের অনুভূতি প্রকাশ করার মতো ভাষা নেই আমার। দেশের সবাই আমাদের এই কীর্তিতে উচ্ছ্বসিত।’
রশিদ পরক্ষণেই বলেন, ‘একমাত্র একজনই আমাদের সেমিফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা দেখেছিলেন। তিনি ব্রায়ান লারা। আমরা তাঁর ধারণা সত্যি প্রমাণিত করেছি। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ওয়েলকাম পার্টিতে আমি ওনাকে বলেছিলাম, আমরা আপনাকে হতাশ হতে দেব না। আমরা সেমিফাইনালে উঠব এবং প্রমাণ করব, আপনি ভুল বলেননি।’
মাত্র ১১৫ রান তুলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচ জয় প্রসঙ্গে রশিদ বলেন, ‘আমাদের মনে হয়েছিল এই পিচে ১৩০-১৩৫ রান ভালো স্কোর হবে। সেদিক থেকে ১৫-২০ রান কম করেছিলাম আমরা। তবে খেলাটা ছিল মানসিকতার। আমরা জানতাম সেমিফাইনালে যাওয়ার জন্য ওরা ১২ ওভারে রান তুলে নেওয়ার চেষ্টা করবে। সেই জায়গাটাকেই কাজে লাগানোর পরিকল্পনা ছিল। জানতাম ওরা ব্যাট চালালে সেই সুযোগে উইকেট তুলে নেওয়া যাবে।'
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার কিংসটাউনে শুরুতে ব্যাট করে আফগানিস্তান নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটের বিনিময়ে ১১৫ রান সংগ্রহ করে। বৃষ্টির জন্য বাংলাদেশের সামনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ১৯ ওভারে ১১৪ রানের। পালটা ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ১৭.৫ ওভারে ১০৫ রানে অল-আউট হয়ে যায়।