ভারতীয় মহিলা দলের প্রাক্তন পেসার ঝুলন গোস্বামীকে সম্মান জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিএবি। তাঁর নামে ইডেন গার্ডেন্সে একটি স্ট্যান্ডের নামকরণ করা হচ্ছে বলে ঘোষণা হয় সম্প্রতি। ঝুলন গোস্বামীর পাশাপাশি ইডেনের একটি স্ট্যান্ডের নামকরণ হচ্ছে কর্নেল এনজে নায়ারের নামেও। তবে কে এই কর্নেল এনজে? উল্লেখ্য, নীলকান্তন জয়চন্দ্রন নায়ার ভারতীয় সেনার আধিকারিক ছিলেন। তিনি সেনার একমাত্র অফিসার যিনি কি না, অশোক চক্র এবং কীর্তি চক্র পেয়েছেন। সেই অর্থে তিনি ভারতীয় সেনার সবথেকে বেশি সম্মাননা পাওয়া আধিকারিকও বটে। (আরও পড়ুন: ইলন মাস্কের নজর কাড়লেন জসপ্রীত বুমরাহ? এককথায় মার্কিন ধনকুবের বললেন...)
ঝুলন গোস্বামী কর্নেল এনজে নায়েরের নামে স্ট্যান্ড নামাঙ্কিত করে সিএবি প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'আমি দুই কিংবদন্তির নামে স্ট্যান্ডের নামকরণ করতে পেরে গর্বিত। এই স্মরণীয় সন্ধ্যার অংশ হতে পেরে সকলের মতোই আমিও গর্বিত। এই দুই কিংবদন্তি ব্যক্তিত্বের বীরত্ব এবং কৃতিত্বকে স্যালুট জানানোর সুযোগ পেয়ে আমরা গর্বিত।' এদিকে গতকালকে সিএবির অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন কর্নেল নায়ারের ছেলে শিবম জে নায়ার। বাবার নামে স্ট্যান্ডের নামকরণের জন্য সিএবির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শিবম। তিনি বলেন, 'আমার বাবাকে সম্মান জানানোয় সিএবিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। ইডেন গার্ডেন্সের একটি স্ট্যান্ড কর্নেল এনজে নায়ারের নামে হওয়ায় আমি সম্মানিত।' এদিকে গতকালকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও। কর্নেল নায়ারকে নিয়ে সৌরভ বলেন, 'ভারতীয় সেনার হয়ে দেশকে গর্বিত করেছিলেন কর্নেল এনজে নায়ার।'
উল্লেখ্য, কর্নেল এনজে নায়ারের জন্ম হয়েছিল ১৯৫১ সালে কেরলের এর্নাকুলামে। তিনি মারাঠা লাইট ইনফ্যান্ট্রিতে ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি সেনায় যোগ দিয়েছিলেন। উত্তরপূর্ব ভারতে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন কর্নেল নায়ার। ১৯৮৩ সালে মিজোরামে বিচ্ছিনতাবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্যে তাঁকে কীর্তি চক্রে ভূষিত করা হয়েছিল। ১৯৯৩ সালে নাগাল্যান্ডে তাঁর কনভয়ে হামলা চালিয়েছিল বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। সেই সময় নিজের জওয়ানদের রক্ষা করতে নিজেই এগিয়ে গিয়ে লড়াই করেছিলেন কর্নেল নায়ার। সেই সময় এক জেসিও সহ ১৪ জন সেনাকর্মী শহিদ হয়েছিলেন। তবে সেই সময় গুলিবিদ্ধ হয়েও লড়াই চালিয়ে যান কর্নেল নায়ার। পরে তিনি শহিদ হয়েছিলেন। তাঁর বীরত্বের স্বীকৃতি হিসেবে কর্নেলকে ১৯৯৪ সালে মরণোত্তর অশোক চক্র দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে কর্নেল এনজে নায়ারের পাশাপাশি ইডেনের স্ট্যান্ডের নামকরণ হচ্ছে বাংলার মেয়ে ঝুলন গোস্বামীর নামেও। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুরন্ত সব নজির গড়ে অবসর নিয়েছিলেন ঝুলন ওরফে চারদাহ এক্সপ্রেস। ভারতের হয়ে ১২টি টেস্টে তাঁর ঝুলিতে ছিল ৪৪ উইকেট। ২০৪টি ওডিআই ম্যাচে ২৫৫ উইকেট নেওয়ার বিশ্বরেকর্ডও নিজের নামে করেছিলেন ঝুলন। এছাড়াও ৬৮টি টি২০ ম্যাচে ঝুলন নিয়েছিলেন ৫৬ উইকেট।