ভারতের হেড কোচ গৌতম গম্ভীর, যিনি ভারতীয় দলের কোচ হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত খুব একটা সাফল্য পাননি। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরোয়া সিরিজে হার এবং অস্ট্রেলিয়ায় বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতেও হার। ভারতের খারাপ পারফরম্যান্সের কারণে এই মুহূর্তে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে আছেন গম্ভীর। তিনি তার ব্যক্তিগত সহকারীকে নিয়ে আরও সমস্যায় পড়তে পারেন। বিসিসিআই সূত্রের খবর, অস্ট্রেলিয়ায় উপস্থিত ছিলেন গম্ভীরের ব্যক্তিগত সহকারী, আর এই কারণে বিরক্ত বোর্ড। জানা যাচ্ছে গম্ভীরের পার্সোনাল অ্যাসিসটেন্ট ভারতীয় দলের সঙ্গে সব জায়গায় উপস্থিত ছিলেন।
একটি সূত্রের মাধ্যমে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিটিআইকে জানানো হয়ছে যে, বিসিসিআই অফিসিয়ালটি গম্ভীরের ব্যক্তিগত সহকারীর উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচকদের জন্য নির্দিষ্ট গাড়িতে তার বসা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
আরও পড়ুন… চাপে PSL-এ সুযোগ পাওয়া ইংলিশ ক্রিকেটার! আদৌ কি NOC দেবে ECB? তৈরি হয়েছে জটিলতা
বিসিসিআই অফিসিয়াল বলেন, ‘তার ব্যক্তিগত সহকারী কেন জাতীয় নির্বাচকদের জন্য বরাদ্দ হওয়া নির্দিষ্ট গাড়িতে বসেছিলেন? তারা তো সেখানেও একটি অজ্ঞাত তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলোচনা করতে পারতেন না। কেন তাকে অ্যাডিলেডে বিসিসিআইয়ের অতিথি বক্সে জায়গা দেওয়া হয়েছিল?’
তিনি আরও প্রশ্ন তুলেছেন যে, কীভাবে গম্ভীরের ব্যক্তিগত সহকারী শুধুমাত্র খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফদের জন্য নির্ধারিত ব্রেকফাস্ট এলাকায় বসে সকালের খাবার খেতেন। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘কীভাবে তিনি পাঁচ তারা হোটেলের সেই স্থানীয় এলাকায় ব্রেকফাস্ট করেছেন, যা কেবলমাত্র দলের সদস্যদের জন্য নির্ধারিত ছিল?’
আরও পড়ুন… দিল্লির হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে খেলতে নামবেন বিরাট কোহলি? কী জানাল DDCA-এর সূত্র
অনেকেই চ্যাপেলের সঙ্গে গম্ভীরের সাদৃশ্য দেখতে পাচ্ছেন? এদিকে, জাতীয় নির্বাচক কমিটি মনে করে যে, হেড কোচের নির্বাচনী বিষয়গুলোতে খুব বেশি হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। এক প্রাক্তন নির্বাচক বলেছেন, গম্ভীরের আচরণ প্রাক্তন কোচ গ্রেগ চ্যাপেলের মতো। অস্ট্রেলিয়ান কোচ, যিনি অনেক আগ্রহের সঙ্গে এসেছিলেন, পরে তার প্রশিক্ষণ পদ্ধতির কারণে সিনিয়র খেলোয়াড়দের সঙ্গে মতবিরোধের পর বিশৃঙ্খলার মধ্যে চলে যান।
আরও পড়ুন… নিজের ভুল শোধরানোর জন্য রঞ্জি ট্রফিকে বাছলেন শুভমন গিল! খেলবেন কর্ণাটক বনাম পঞ্জাব ম্যাচ
বোর্ডের এক প্রাক্তন নির্বাচক, যিনি শাস্ত্রীর কোচিং সময়ের বেশ কিছু সফরে ছিলেন, তিনি বলেন, ‘তুমি যদি রবি শাস্ত্রীর মতো হও, যিনি মিডিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ছিলেন, খেলোয়াড়দের প্রশংসা করতেন এবং তাদের ‘আলফা মেল’ হিসেবে উপস্থাপন করতেন। অথবা রাহুল দ্রাবিড়, গ্যারি কার্স্টেন বা জন রাইটের মতো হও, যারা দূরে থাকতেন এবং খেলোয়াড়দের আলোচনায় আসতে দিতেন। ‘চ্যাপেল পদ্ধতি’ ভারতের জন্য কাজ করে না। গম্ভীর, শাস্ত্রী বা দ্রাবিড়রা চলে যাবেন, কিন্তু খেলোয়াড়রা থাকবেন।’
গম্ভীর গত বছরের জুলাই মাসে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ভারতের টেস্ট দল ১০টি ম্যাচের মধ্যে ৬টি হেরেছে এবং শ্রীলঙ্কায় একদিনের সিরিজও হারিয়েছে। এই ফলাফলগুলো বিরাট কোহলি এবং রোহিত শর্মার মতো ক্রিকটারদের আন্তর্জাতিক ভবিষ্যৎকে বড় ধরনের অস্থিরতায় ফেলে দিয়েছে। তাদের নিজেদের খারাপ ফর্মের কারণে। তবে গম্ভীরের অবস্থানও কিছুটা অস্থির হয়ে পড়েছে। এই নাটকীয়তা প্রতিদিন বেড়ে চলেছে। এবং বলা যায় যে, ফেব্রুয়ারি ১৯ থেকে মার্চ ৯ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আসার আগে ভারতের ড্রেসিং রুমে এমন অস্থিরতা বিরাজ করবে।