কথায় নয়, জবাব দিতে হয় মাঠে। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মতো ২টি হেভিওয়েট দলকে বিশ্বকাপের মঞ্চে হারিয়ে বুঝিয়ে দিল আফগানিস্তান। এমনটা নয় যে আফগানিস্তান ক্রিকেট দল শক্ত প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কখনও জেতেনি। বরং গত ওয়ান ডে বিশ্বকাপের মঞ্চে পাকিস্তান ও চলতি টি-২০ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের মতো হেভিওয়েট দলকে হারিয়েছেন রশিদ খানরা। তবে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে জয় বিশেষ কারণে বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে আফগানদের কাছে।
আফগানিস্তানে তালিবানি শাসন পুনরায় কায়েম হওয়ার পরে ওদেশে মেয়েদের খেলাধুলো বন্ধ। স্বাভাবিকভাবেই আফগানিস্তানে মহিলা ক্রিকেট ব্রাত্য। মেয়েদের ক্রিকেট নিয়ে আফগানিস্তান নিজেদের অবস্থান না বদলালে ওদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট সিরিজ খেলবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। যদিও আইসিসি ট্রফিতে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে বাধ্য হয় তারা।
আফগানিস্তানের মতো দলের কাছে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মতো বড় দলের বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলা নিঃসন্দেহে বিরাট বিষয়। তবে সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে হয় রশিদ খানদের। অস্ট্রেলিয়া তো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলার কথা ঘোষণা করেও স্থগিত করে দেয় পরিকল্পনা।
তালিবানি শাসনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার উপায় নেই আফগান ক্রিকেটারদের। সুতরাং, এই বঞ্চনা তাদের মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে দেখা গিয়েছে আফগান ক্রিকেটারদের। সেই আওয়াজ যে অজি ক্রিকেট কর্তারা কানে তুলবেন না, এটা বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না। তবে রবিবার কিংসটাউনে যে জবাব দেয় আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়ার সেই ক্ষত দগদগে থাকবে বেশ কিছুদিন।
আফগানিস্তান ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে অস্বীকার করে যে ২টি দেশ, ১০ মাসের মধ্যে সেই ২টি বড় দলকেই বিশ্বকাপের মঞ্চে হারিয়ে জবাব দেয় আফগানিস্তান। ২০২৩ ওয়ান ডে বিশ্বকাপের ম্যাচে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দেয় আফগানিস্তান। এবার ২০২৪ টি-২০ বিশ্বকাপের সুপার এইটের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দেন রশিদ খানরা।
গত বছর ১৫ অক্টোবর দিল্লিতে ওয়ান ডে বিশ্বকাপের ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৬৯ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত করে আফগানিস্তান। এবার রবিবার কিংসটাউনে চলতি টি-২০ বিশ্বকাপের সুপার এইটের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২১ রানে পরাজিত করে আফগানিস্তান। বিশ্বকাপের মঞ্চে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াকে হারানো স্বাভাবিকভাবেই বাড়তি তৃপ্তি দেবে আফগান ক্রিকেটারদের। এই হারের পরে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসে কিনা, সেটাই হবে দেখার।