ভারতীয় দল কি খুব বেশি পরীক্ষা করছে? কয়েকদিন আগেই এই প্রশ্ন করাতেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছিলেন কোচ রাহুল দ্রাবিড়। তিনি বলেছিলেন যে চার-পাঁচে কারা নামবে সেটা ১৮ মাস আগেই তিনি জানতেন। কিন্তু চোটের কারণে বাধ্য হয়ে বিকল্পের চেষ্টা করতে হচ্ছে। কিন্তু তার এই ব্যাখ্যা যে সকলের হজম হচ্ছে না সেট কার্যত এদিন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথাতেই স্পষ্ট। কেন ভারতীয় দল এখনও টিম কম্বিনেশন সেট করতে পারেনি, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর ২০০৩-এর দলের উদাহরণ দিয়ে বলেন যে ধারাবাহিক ভাবে জিততে গেলে চেনা মুখের ওপরেই বাজি ধরতে হবে। একই সঙ্গে তিনি অস্ট্রেলিয়ার তিনবার টানা বিশ্বকাপজয়ী দলের কথাও বলেন, যারা কার্যত দিনের পর দিন একই একাদশ নিয়ে মাঠে নামত। সেই কারণে ভারত যত তাড়াতাড়ি প্রথম একাদশ ঠিক করে নিতে পারে, ততটাই মঙ্গল বলে মনে করেন প্রাক্তন অধিনায়ক।
‘আমাদের একটি সেটেলড কম্বিনেশন ছিল। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা তখন খুব ভালো দল ছিলাম এবং জিতছিলাম। আমাদের কিছু অসাধারণ খেলোয়াড় ছিল। সেজন্যই আমি বলতে থাকি বড় টুর্নামেন্টের আগে বেশি অদলবদল করবেন। কিছু ছেলেকে বেছে একটা বছরের জন্য খেলান, হার-জিত যাই হোক, দল হিসেবে তৈরি হোক’, ‘ব্যাকস্টেজ উইথ বোরিয়া’ অনুষ্ঠানে এসে এই কথা বললেন সৌরভ।
‘অস্ট্রেলিয়া ১৯৯৯-২০০৩-এর মধ্যে বছরের পর বছর ধরে একই দল খেলে সাফল্য পেয়েছে। ২০০৩-এ এক বছরের জন্য, আমরা সবকিছু জিতেছিলাম। আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজে জিতেছি, ন্যাটওয়েস্ট জিতেছি এবং নিউজিল্যান্ডের কঠিন পিচে খারাপ ফল ছাড়া বাকি জায়গায় জিতেছি। আমরা খুব ভালো দল হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিলাম।’ সৌরভের মতে এশিয়া কাপেই তাই চূড়ান্ত দল ঠিক হয়ে যাওয়া দরকার যাতে শেষে আর কোনও বদল করতে না হয়।
মহারাজের মতে, ঘরের কন্ডিশনে ভারত সবসময় ফেভারিট হবে। ‘দেশের মাটিতে ভারত সবসময় ফেভারিট থাকবে। দল খুব ভালো এবং প্লেয়াররা ফিট থাকলে ঘরের কন্ডিশনে তাদের সবসময়ই খুব ভালো সুযোগ থাকবে।' তবে ফাস্ট বোলাররা কেমন খেলছে সেটা যে গুরুত্বপূর্ণ হবে, সেটা আলাদা করে বলতে ভোলেননি দাদা।
সমস্যাটা হচ্ছে যে এই কথাগুলি রোহিত শর্মা ও রাহুল দ্রাবিড় জানেন না তা নয়। তবে পরিস্থিতিই এমন যে ভারতকে এখনও মিডল অর্ডারের দুই ক্রিকেটার ও স্পিনারের জন্য হাতড়াতে হচ্ছে। এর নেপথ্যে অনেকগুলি কারণ আছে। সবচেয়ে বড় হল চোট। ঋষভ, রাহুল ও শ্রেয়সের চোটের জেরে ভারতের প্ল্যানিং পুরোপুরি বরবাদ হয়ে গিয়েছে যেটা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন দ্রাবিড়। এখন রাহুল ও শ্রেয়স হয়তো ফিরেছেন কিন্তু ম্যাচ ফিট কিনা, সেটা খেললেই বোঝা যাবে। এই কারণেই সূর্য, সঞ্জু, ইশানদের ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে খেলাতে হচ্ছে। অন্যদিকে ২০১১ ও ২০০৩ এ ভারতের প্রচুর অলরাউন্ডার থাকলেও এবার সেটা নেই। অধিকাংশ বোলাররা ব্যাট ধরতে জানেন না, ব্যাটাররা আবার হাত ঘোরান না। তাই রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে শার্দুল ঠাকুর ও অক্ষর প্যাটেলকে খেলানোর লোভ থাকছেই ব্যাটিং লেজটা একটু মোটা করার জন্য। কিন্তু এতে আবার বোলিংয়ের গুণমান অক্ষুণ্ণ থাকছে কিনা, সেই প্রশ্ন থাকছে।
২০০৩-এও সমস্যা ছিল না তা নয়। অনিল কুম্বলেকে বসিয়ে ব্যাটিং ডেপথের জন্য দীনেশ মোঙ্গিয়াকে খেলান সৌরভ। তবে ২০ বছরে খেলা অনেকটা বদলেছে, ২০-২০-র প্রভাব রূপান্তরিত করেছে ৫০ ওভারের খেলাকে। সেই কারণেই হয়তো তুলনা টানাটা একটু শক্ত। তবে ফাইনালিস্ট অধিনায়কের পরামর্শ মেনে দল যে খুব দ্রুতই প্রথম একাদশ নিশ্চিত করতে চাইবে, তা বলাই বাহুল্য।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড বিস্তারিত ক্রীড়াসূচি - এর জন্য চোখুন HT Bangla - তে