বিশ্বকাপের গত আসরে সেমিফাইনালে হেরে যায় ভারতীয় দল। ১১ জুলাই, ২০১৯-এ, নিউজিল্যান্ড বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন দলকে পরাজিত করে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল। তবে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারের মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি রান আউট হতেই টিম ইন্ডিয়ার আশা শেষ হয়ে যায়। সেই বিশ্বকাপের সময় ভারতীয় দলের ব্যাটিং কোচ সঞ্জয় বাঙ্গার বড়সড় তথ্য প্রকাশ করেছেন। রবিবার (২২ অক্টোবর) ভারত-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ নিয়ে কথা বলার সময় তিনি এ কথা বলেন।
সঞ্জয় বাঙ্গার জানান, ম্যাচে হারের পর ধোনি কাঁদতে শুরু করেন। ড্রেসিংরুমে অনেকক্ষণ কাঁদেন তিনি। ধোনির সঙ্গে হার্দিক পান্ডিয়া ও ঋষভ পন্তও কাঁদছিলেন। বাঙ্গার বলেন, ‘সেমিফাইনালে পরাজয়ের পর ধোনির কান্না থামছিল না। ড্রেসিংরুমে পন্ত ও হার্দিকও কাঁদছিলেন।’ সেই ম্যাচই প্রমাণিত হল ধোনির ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। এরপর ভারতীয় দলের জার্সি পরেননি ধোনি।
ভারতীয় দল ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিততে পারেনি। সেই বছর, সেমিফাইনালে হেরে বিদায় নিয়ে ছিল টিম ইন্ডিয়া। এই পরাজয় ছিল দলের সকল খেলোয়াড়ের জন্য খুবই মর্মাহত। মহেন্দ্র সিং ধোনি, হার্দিক পান্ডিয়া এবং ঋষভ পন্তের জন্য এই বিশ্বকাপটা বিশেষ ছিল। এই পরাজয় এই তিন খেলোয়াড়ের হৃদয়ে এমন গভীর প্রভাব ফেলেছিল যে ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুমে তাঁরা খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। এমনকি তাঁরা একটা সময়ে অঝোরে কাঁদতে থাকেন। ২০২৩ সালের ২২ অক্টোবর অর্থাৎ রবিবার ভারত বনাম নিউজিল্যান্ডের মধ্যে ম্য়াচের সময়ে এই পুরো ঘটনাটি প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার সঞ্জয় বাঙ্গার।
সঞ্জয় বাঙ্গার বলেছিলেন, ‘ধোনি, পন্ত এবং পান্ডিয়া ড্রেসিংরুমে ছিলেন। তারা তখন তাদের চোখের জল নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। বিশ্বকাপ ২০১৯-এর সেমিফাইনালে হেরে অঝোরে কেঁদেছিলেন তাঁরা।’ খেলোয়াড়দের অবস্থা সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘খেলোয়াড়রা তখন শিশুদের মতো কাঁদতে শুরু করেন। ধোনিও একটি ছোট নিষ্পাপ শিশুর মতো কাঁদছিলেন। পান্ডিয়া এবং পন্তের চোখও অশ্রুতে ভিজে গিয়েছিল।’ সঞ্জয় বাঙ্গারের মতে, ‘এটি টিম ইন্ডিয়ার সমস্ত খেলোয়াড়ের জন্য একটি হৃদয় বিদারক দৃশ্য ছিল। এর কারণ হল দলটি ভালো খেলছিল। আমরা তখন লিগ পর্বে সাতটি ম্যাচ জিতেছিলাম এবং যেভাবে আমরা ছিটকে গিয়েছিলাম তা ঠিক ছিল না।’
ভারত-নিউজিল্যান্ড ম্যাচে কী হয়েছিল?
সেই ম্যাচে ইংল্যান্ডের ম্যাঞ্চেস্টারে প্রথমে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড দল ৫০ ওভারে আট উইকেটে ২৩৯ রান করে। বৃষ্টির কারণে দুই দিনেই শেষ যায় ম্যাচটি। খারাপ আবহাওয়া ও বৃষ্টির কারণে পরিস্থিতি ফাস্ট বোলারদের অনুকূলে ছিল। নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়রা এর সুযোগ নিয়ে ভারত ছয় উইকেট ৯২ রানে কমিয়ে দেয়। ভারত বড় পরাজয়ের কাছাকাছি ছিল। এখান থেকে ধোনি এবং রবীন্দ্র জাদেজা ইনিংস সামলেছিলেন।
সপ্তম উইকেটে ১১৬ রানের জুটি গড়েছিলেন ধোনি ও জাদেজা। ২০৮ রানে আউট হন জাদেজা। এর পরে, ৪৯তম ওভারের তৃতীয় বলে ধোনি রান আউট হলে টিম ইন্ডিয়ার আশা শেষ হয়ে যায়। ৫০ রান করেছিলেন তিনি। ভারতীয় দল ৪৯.৩ ওভারে ২২১ রানে গুটিয়ে যায়। প্যাভিলিয়নে ফেরার সময় কেঁদেছিলেন ধোনি। চোখের জল লুকানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি, কিন্তু সম্ভব হয়নি। সঞ্জয় বাঙ্গারের মতে, ধোনি ড্রেসিংরুমে অনেকক্ষণ কেঁদেছিলেন।