এমনিতেই ২৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে প্রবল চাপে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তার উপর ট্র্যাভিস হেডের মোক্ষম আঘাত সামলানো মুশকিল হয়ে পড়ে প্রোটিয়াদের পক্ষে। ফলে ইডেনে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ ২০২৩-এর সেমিফাইনালে বড় রানের ইনিংস গড়তে ব্যর্থ হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
ইডেনে টস-ভাগ্য সঙ্গ দেয় দক্ষিণ আফ্রিকাকে। এক্ষেত্রে উভয় সংকটে পড়েন প্রোটিয়া দলনায়ক তেম্বা বাভুমা। ইডেনের পিচে স্পিনারদের সফল হওয়ার বিস্তর সম্ভাবনা দেখে সব অধিনায়কই শুরুতে ব্যাট করতে চাইবেন। তবে মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় পেসারদের সফল হওয়ার সম্ভাবনাও দেখা দেয় বৃহস্পতিবার।
বাভুমা শেষমেশ শুরুতে ব্যাট করাই শ্রেয় মনে করনে। যদিও তাঁর সিদ্ধান্ত কতটা সঠিক ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংসের শুরুতেই। ম্যাচের একেবারে প্রথম ওভার থেকে উইকেট হারাতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা।
প্রথম ওভারে খাতা খোলার আগেই স্টার্কের বলে আউট হন তেম্বা বাভুমা। ষষ্ঠ ওভারে জোশ হেজেলউড সাজঘরে ফেরান কুইন্টন ডি'কককে। ৩ রান করে ক্রিজ ছাড়েন কুইন্টন। ১১তম ওভারে স্টার্কের দ্বিতীয় শিকার হন এডেন মার্করাম। ১০ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ১২তম ওভারে রাসি ভ্যান ডার দাসেন সাজঘরে ফেরেন হেজেলউডের দ্বিতীয় শিকার হয়ে। রাসি ৬ রান করে আউট হন।
ডেভিড মিলারকে সঙ্গে নিয়ে এনরিখ ক্লাসেন বিপর্যয় রোধের চেষ্টা চালান। কিছুটা সফলও হন তাঁরা। দু'জনে মিলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে দলগত ১০০ রানের গণ্ডি পার করান। স্টার্ক, হেজেলউড, জাম্পা ও ম্যাক্সওয়েলকে দিয়েও জুটি ভাঙা যাচ্ছে না দেখে ইনিংসের ৩১তম ওভারে অজি দলনায়ক কামিন্স বোলিং আক্রমণে নিয়ে আসেন পার্টটাইম স্পিনার ট্র্যাভিস হেডকে। কামিন্সের সেই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত কার্যকরী প্রমাণিত হয়।
পার্টটাইম স্পিনারকে সামনে পেয়ে ব্যাট চালানোর লোভ সামলাতে পারেননি ক্লাসেন। তিনি প্রথম ২টি বলে পরপর ২টি চার মারেন। তৃতীয় বলে কোনও রান খরচ করেননি হেড। চতুর্থ বল টার্ন করবে ভেবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ডিফেন্স করার চেষ্টা করেন এনরিখ। তবে বল পিচে পড়ে সোজা বেরিয়ে যায় এবং স্টাম্পে গিয়ে লাগে। ৩০.৪ ওভারে ক্লাসেন ব্যক্তিগত ৪৭ রানে আউট হন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ১১৯ রানে ৫ উইকেট হারায়।
ক্লাসেন আউট হওয়ার পরে ব্যাট হাতে ক্রিজে আসেন মারকো জানসেন। তবে তাঁকে প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ-র ফাঁদে জড়ান ট্র্যাভিস। ক্লাসেন বল ঘুরবে ভেবে বোকা বনে যান। জানসেন আউট হন বল সোজা বেরিয়ে যাবে ভেবে ডিফেন্স করতে গিয়ে।
আসলে ৩০.৫ ওভারে হেডের সেই বলটি পিচে পড়ে ভিতরের দিকে বাঁক নেয় এবং জানসেনের প্যাডে গিয়ে লাগে। আম্পায়ার আউট দিতে ভুল করেননি। রিভিউ নিয়েও বাঁচেননি মারকো। জানসেন শূন্য রানে মাঠ ছাড়েন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ১১৯ রানে ৬ উইকেট হারায়। হ্যাটট্রিক করার সুযোগ থাকলেও ট্র্যাভিস হেড ওভারের শেষ বলে উইকেট নিতে পারেননি।