ভারত আসন্ন ওডিআই বিশ্বকাপের জন্য গত সপ্তাহে তাদের ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে। এবং ভারতীয় নির্বাচকদের মতে, এটাই সেরা দল। ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর থেকে কোনও আইসিসি টুর্নামেন্টে জেতেনি ভারত। সেই খরা এই ট্রফি জিতে কাটাতে চায় টিম ইন্ডিয়া।
যদিও বিসিসিআই যে স্কোয়াড ঘোষণা করেছে, তা অভিজ্ঞতা এবং গুণমানে ভরপুর। কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে কিছু প্রশ্ন চিহ্ন অবশ্য রয়ে গিয়েছে। সেগুলি কী, জেনে নিন!
ব্যাটিং
অধিনায়ক রোহিত শর্মা স্পষ্টতই তাঁর স্বাভাবিক জায়গায় খেলবেন। অর্থাৎ ওপেন করবেন। ভারত অধিনায়ক গত বিশ্বকাপে ন'টি ইনিংসে পাঁচটি সেঞ্চুরি করেছিলেন, ২০১৯ সালের ফর্মে থাকলে, ভারত বড় নির্ভরতা পাবে। চলতি এশিয়া কাপে তিনটি হাফ সেঞ্চুরি করে তিনি ভালো ফর্মে থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এখন বিশ্ব কাপে রোহিত কতটা জ্বলে ওঠেন, সেটাই দেখার।
রোহিতের ওপেনি পার্টনার শুভমান গিল আহামরি ফর্মে নেই। তিনি তাঁর ক্যারিয়ারে মিশ্র ছন্দে রয়েছেন। একেবারেই ধারাবাহিক ভাবে খেলতে পারছেন না। এশিয়া কাপে তিনি নেপাল এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে দু'টি হাফ সেঞ্চুরি এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন। তবে আশা করা হচ্ছে, বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে তাঁকে আরও ভালো ফর্মে পাওয়া যাবে।
বিরাট কোহলি, শ্রেয়স আইয়ার, কেএল রাহুল এবং হার্দিক পান্ডিয়া সম্ভবত ঘরের মাছে সেরা ছয়ের বাকি অংশে খেলতে পারেন। এটি একটি শক্তিশালী ব্যাটিং ইউনিট। কিন্তু বড় উদ্বেগের বিষয় হল, একজন বাঁ-হাতি খেলোয়াড়ের অভাব। বিশ্বকাপ জয়ের অন্যান্য প্রধান প্রতিযোগীদের মধ্যে, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং পাকিস্তানের সমস্ত স্পিন বোলার রয়েছে যারা ডানহাতি। এটা ভারতের বড় দুর্বলতা হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে মধ্য ওভারে এবং পিচ যদি স্পিন সহায়ক হয়।
তবে এর একটি উপায় হতে পারে, শ্রেয়স বা রাহুলের জায়গায় ইশান কিষানকে খেলানো। ইশান ভালো ছন্দেও রয়েছেন। সেই সঙ্গে তাঁকে দলে রাখা হলে, কিছুটা বৈচিত্র্য যোগ হবে। এবং বিরোধী দলকেও পাল্টা ভাবনাচিন্তা করতে হবে। ইযান কিষান ক্যারিবিয়ান সফরে টানা তিনটি হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন। এবং তাঁর ঝুলিতে দ্রুততম ওডিআই ডাবল সেঞ্চুরির নজিরও রয়েছে। এটি তাঁর প্রথম বিশ্বকাপ। এবং তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন যে, ভারতীয় ব্যাটিং লাইন-আপের জন্য তিনি প্রয়োজনীয় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।
বোলিং
ভারত রবীন্দ্র জাদেজা এবং অক্ষর প্যাটেলকে তাদের বিশ্বকাপের স্কোয়াডে রেখেছে। দুই খেলোয়াড়রই বাঁ-হাতি স্পিনারদের কাজটা করে দেওয়ার পাশাপাশি ক্রমানুসারে ৭ নম্বরে ব্যাট করে দলের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারেন। সম্ভাবনা হল অক্ষরের আগে ব্যাট করতে নমাবেন জাদেজা।
কুলদীপ যাদবের পাশাপাশি দুই বাঁ-হাতি স্পিনার জাদেজা এবং অক্ষর মিলে একটি শক্তিশালী স্পিন ইউনিট গঠন করবেন। তবে ভারত তাদের স্কোয়াডে ফ্রন্টলাইন অফ-স্পিনারের অভাব ভালো ভাবে বোধ করবে। এবং বৈচিত্র্যের অভাবের কারণে তারা চাপে থাকবে। রবিচন্দ্রন অশ্বিন গত ছয় বছরে মাত্র দু'টি ওডিআই খেলেছেন এবং সাধারণত এই ফরম্যাটে আর তাঁকে বিবেচনা করা হয় না। তবে বাঁ-হাতিদের বিরুদ্ধে তাঁর বোলিং অমূল্য প্রমাণিত হতে পারে। তাঁর ব্যাটিং দক্ষতার কথাও কারও অজানা নয়।
বাঁ-হাতিদের বিরুদ্ধে কুলদীপের রেকর্ড ভালো। তবে ডানহাতিদের বিরুদ্ধে আহামরি নয়। তাঁর ইকোনমি রেট ৫.১০ (ডান-হাতিদের বিরুদ্ধে ৫.১১-এর তুলনায়) এবং গড় ২৩.১২ (তুলনাতে ২৭.৪০ ডানহাতিদের বিরুদ্ধে)। এদিকে অশ্বিন বাম-হাতিদের বিরুদ্ধে কৃপণ ভাবে ৪.৬৪-তে বল করেছেন। তাঁর গড় কুলদীপের ২৫.২৫-এর চেয়ে বেশি।
অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং অর্ডারের শীর্ষ সাতে ব্যাটার কমপক্ষে তিনজন বাঁ-হাতি। যেটা ভারতের জন্য খুবই উদ্বেগের বিষয় হতে চলেছে। শীর্ষ দলগুলি কিন্তু ভারতের বোলিং আক্রমণের এই দুর্বলতাকে পুরোপুরি কাজে লাগাবে।