ভারতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে শুরুটা ভালোই হয়েছে ওপেনার যশস্বী জয়সওয়ালের। স্রেফ ব্যাট হাতে টেস্টে বা টি২০তে রান পাওয়া নয়, একটিও ম্যাচ না খেলেই তাঁর ট্রফি ক্যাবিনেটে জায়গা করে নিয়েছে টি২০ বিশ্বকাপ। যে টি২০ বিশ্বকাপ বিরাট কোহলি জিতেছেন নিজের কেরিয়ারে প্রায় দেড় দশক কাটানোর পর, সেটাই যশস্বী জিতেছেন মাত্র ১ বছরের মাথায়। চলতি বছরের শুরুর দিকে টেস্টে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুরন্ত ফর্মে ছিলেন ওপেনার যশস্বী।
বয়স ২২ বছর হলেও দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের তারকা বোলারদের নাস্তানাবুদ করে দিয়েছিলেন যশ। বাদ যায়নি জিমি অ্যান্ডারসনের মতো কিংবদন্তিও। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে অভিষেক ঘটলেও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেই নিজেই জাত চিনিয়েছিলেন যশস্বী। করেছিলেন পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৭১২ রান, যা একটি সিরিজের ক্ষেত্রে বিরল। দুই দল মিলিয়ে রোহিত শর্মা, জোস বাটলার, জোর রুট, বেন স্টোক্সের মতো তারকারা থাকলেও তাঁদের পিছনে ফেলে সব লাইম লাইট কেড়ে নিয়েছিলেন এই ছেলে। সেই যশস্বীই এবার জানাচ্ছেন ভারতীয় দলে তাঁর প্রথম কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে বর্তমান কোচ গৌতম গম্ভীরের ফারাকটা ঠিক কোন জায়গায়।
আরও পড়ুন-দলীপ ট্রফিতে লাল বলের ক্রিকেটে ফেরার আগে আবেগঘন বার্তা পন্তের! বললেন কোনও আশা রাখছেন না!
এখনও পর্যন্ত ২৩টি টি২০ ম্যাচে যশস্বী করেছেন ৭২৩ রান,স্ট্রাইক রেট ১৬৪.৩২। এখনও পর্যন্ত ওডিআইতে সুযোগ বা হলেও আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ঢোকার অন্যতম দাবিদার এই ব্যাটার। কারণ তাঁকে স্কোয়াডে রাখা গেলে ওপেনিংয়ে একটা রাইট হ্যান্ড লেফট হ্যান্ড কম্বিনেশনও তৈরি করা যাবে। শিখর ধাওয়ানের পর থেকে তেমনভাবে কোনও বাঁহাতি ওপেনার ধারাবাহিকভাবে ভারতের হয়ে খেলেননি।
কীভাবে ক্রিকেটারদের থেকে নিজেদের সাধারণ খেলাটা বের করে আনেন কোচ গম্ভীর?
যশস্বী সেই নিয়েই কথা বলতে গিয়ে জানাচ্ছেন, ‘আমি শ্রীলঙ্কা সিরিজের সময় গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। উনি আমাদের সমর্থন করেছিল খুব। হাত খুলে নিজেদের যেটা সাধারণ খেলা, সেটাই খেলতে বলেছিল , যেটা আমাদের আত্মবিশ্বাসও দিয়েছিল খুব আর ভয়ডরহীনভাবে খেলতেও সাহায্য করেছিল’।
আরও পড়ুন-'কি ভাগ্যিস! ওটা আমার শেষ ম্যাচ ছিল, নাহলে ছেলেরা আমায়',কোন ভুলের কথা দ্রাবিড়ের গলায়?
১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু বাংলাদেশ সিরিজ। তার আগে দলীপ ট্রফিতেই নিজের হাত খুলে দেখে নিতে চান যশস্বী। তাঁর কথায়, ‘আমি নেটে কঠোর পরিশ্রম করছি। প্রথমে দলীপ ট্রফি রয়েছে এরপর বাংলাদেশ সিরিজ। কোনও ব্যক্তিগত টার্গেট সেট করার বিষয় নেই। তবে ক্রিকেটে সব সময় ধারাবাহিকতা দেখাতে হয়, আর নিজের স্কিলের ওপর কাজ করতে হয়। দলীপ ট্রফি, ইরানি ট্রফির মতো ঘরোয়া প্রতিযোগিতা ক্রিকেটারদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমায় আত্মবিশ্বাস তো দেয়ই, পাশাপাশি আন্তর্জাতিক খেলার জন্যেও তৈরি হতে সুবিধা করে’।
আরও পড়ুন-বিশ্বক্রিকেটে ভারত-অস্ট্রেলিয়াই তো রাজা! Border Gavaskar সিরিজের আগে বললেন ম্যাক্সওয়েল
এবারের দলীপ ট্রফিতে ভারতীয় ক্রিকেটারদের খেলা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে বিসিসিআই। বিরাট-রোহিত-বুমরাহসহ কয়েকজন বাদে বাকিদের খেলতে হচ্ছে এই প্রতিযোগিতায়। বিষয়টি অবশ্য সাধুবাদ জানাচ্ছেন যশস্বী। তাঁর মতে, দলের হয়ে খেলে জেতাতে পারলে নিজেরই আত্মবিশ্বাস বাড়ে। আর দলীপ ট্রফির মতো প্রতিযোগিতায় খেললে যেহেতু সমস্ত প্রথম সারির ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে খেলতে হচ্ছে,ফলে নিজেদেরও ভালো মতো পরীক্ষা হয়ে যায়। তাই গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট সিরিজের আগে এমন ঘরোয়া প্রতিযোগিতা খেলার ইতিবাচক দিক আছে।