শনিবার চিন্নাস্বামীতে জয়ের জন্য শেষ ওভারে ৩৫ রান দরকার ছিল চেন্নাই সুপার কিংসের। তবে তাদের প্লে-অফের যোগ্যতা অর্জনের জন্য শেষ ওভারে তুলতে হতো ১৭ রান। মহেন্দ্র সিং ধোনি ও রবীন্দ্র জাদেজার মতো দুই অভিজ্ঞ তারকা যখন ক্রিজে ছিলেন, এক ওভারে ১৭ রান ওঠা নিতান্ত স্বাভাবিক বিষয়।
মহেন্দ্র সিং ধোনি অতীতে বহুবার এমন পরিস্থিতি থেকে ম্যাচ নিজেদের অনুকূলে টেনে নিয়েছেন। এমন চাপের পরিস্থিতিতে আরসিবি শেষ ওভারে বল করতে পাঠায় যশ দয়ালকে। গতবছর যশ দয়ালের শেষ ওভারে ৫টি ছক্কা মেরে রিঙ্কু সিংয়ের ম্যাচ জেতানোর স্মৃতি এখনও টাটকা ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে।
শেষ ওভারে যশ দয়াল প্রথম বলই ফুলটস করে বসেন। ধোনি সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি। তিনি ১১০ মিটারের পেল্লাই ছক্কা হাঁকিয়ে বল স্টেডিয়ামের বাইরে বার করে দেন। ফলে প্লে-অফের টিকিট হাতে পাওয়ার জন্য ৫ বলে ১১ রান দরকার ছিল চেন্নাইয়ের।
ধোনির শটে বল স্টেডিয়ামের বাইরে চলে যাওয়ায় অন্য বল চেয়ে নিতে হয় আম্পায়ারদের। ভিজে বল ব্যাটসম্যানদের সুবিধা দিচ্ছিল। শুকনো বল হাতে পেতেই ছবিটা বদলে যায়। ওভারের দ্বিতীয় বলে আউট হন ধোনি। যশ দয়ালের স্লো ডেলিভারিতে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে স্বপ্নিল সিংয়ের হাতে ধরা পড়েন মাহি। স্লো বল ঠিকমতো কানেক্ট হয়নি ধোনির ব্যাটে। বাকি ওভারে স্লোয়ার ডেলিভারির বাইরে কিচ্ছু ভাবেননি দয়াল। চতুর্থ বলে ১ রান ওঠে। শেষ ২ বলে কোনও রান ওঠেনি।
অর্থাৎ, যশ দয়ালের শেষ ওভারে ৭ রান সংগ্রহ করে চেন্নাই সুপার কিংস। ফলে তাদের ছিটকে যেতে হয় প্লে-অফের দৌড় থেকে। আরসিবি শেষ চারের টিকিট হাতে পায়। শেষ ওভারে ধোনিদের আটকে রেখে আরসিবিকে প্লে-অফে তোলার জন্য প্রভূত কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে যশ দয়ালকে। সেই কৃতিত্ব তাঁর প্রাপ্যও। তবে অনেকেরই হয়তো নজর এড়িয়ে যায় যে, শেষ ওভারে যশ দয়ালের সাফল্যের পিছনে বিরাট কোহলির হাত ছিল সব থেকে বেশি। যশ দয়াল শুধু কোহলির ছকে দেওয়া গেমপ্ল্যান অনুযায়ী বল করেন। তাতেই আসে সাফল্য।
প্রথম বল ইয়র্কার করার চেষ্টায় ফুলটস করে বসেন যশ দয়াল। ফলে তাঁকে ছক্কা হজম করতে হয়। বাউন্ডারি লাইনে ফিল্ডিং করা বিরাট কোহলি যশ দয়ালকে ফুলটস বল করতে দেখে রাগে গালাগালও দিয়ে বসেন। ব্রডকাস্টারদের ক্যামেরায় ধরে পড়ে সেই ছবি। তবে যশ দয়ালকে তাঁর হালে ছেড়ে দিতে রাজি ছিলেন না বিরাট। তিনি দৌড়ে এসে কথা বলেন বোলারের সঙ্গে।
রীতিমতো ধমকের সুরে কোহলি দয়ালকে স্লো বল করার পরামর্শ দেন। কোহলিকে বলতে শোনা যায় যে, ‘ইয়র্কার নয়, স্লোয়ার বল কর।’ বিরাটের কথা মতোই স্লো বল করেন যশ দয়াল। বাকিটা ইতিহাস।