বিদেশ সফরে ক্রিকেটারদের সঙ্গে পরিবারের উপস্থিতি নিয়ে বিসিসিআই বিধি-নিষেধ আরোপ করায় ভারতীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। হতাশাজনক অস্ট্রেলিয়া সফরের পরেই বিসিসিআই এমন পদক্ষেপ নেওয়ায় ক্রিকেটাররা প্রকৃতপক্ষেই চিন্তিত ছিলেন। এমনকি অধিনায়ক রোহিত শর্মা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য ভারতীয় দল ঘোষণার সময়ে অজান্তেই নিজেদের দুশ্চিন্তার বিষয়টি ফাঁস করে বসেন। তিনি বলে বসেন যে, ‘আমাকে কয়েকটি বিষয় নিয়ে সচিবের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। পরিবার এবং অন্যান্য কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে হবে।’
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ১৫ দিনের কম সময়ের সফরে ক্রিকেটারদের পরিবার আর তাঁদের সঙ্গে থাকতে পারবে না। যদিও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সময়ে ক্রিকেটারদের পরিবারের সদস্যদের গ্যালারিতে দেখা যায়। বিরাট কোহলির স্ত্রী অনুষ্কা শর্মা পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের ম্যাচ দেখতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন।
বেশিরভাগ খেলোয়াড় বিসিসিআইয়ের নতুন নিয়ম সম্পর্কে চুপ থাকলেও, কোহলি মুখ খোলেন। এক্ষেত্রে কোহলির দৃষ্টিভঙ্গি নিতান্ত সহজ। তাঁর মতে, কঠিন সময়ে পরিবারের পাশে থাকার প্রভাব বলে বোঝানো মুশকিল। খেলোয়াড়রা একে অপরকে সাহায্য করার জন্য অবশ্যই উপস্থিত থাকেন, কিন্তু কঠিন সময়ে পরিবারের ভালোবাসা ও সমর্থন তুলনাহীন।
ভারতের প্রথম বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক কপিল দেব এই বিতর্কে নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ঠিক জানি না, এটা ব্যক্তিগত বিষয়। আমার মনে হয় এটা ক্রিকেট বোর্ডের সিদ্ধান্ত। তবে আমার মতামত হলো, হ্যাঁ, আপনার পরিবারের প্রয়োজন। কিন্তু আপনার সবসময় দলেরও প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন:- IPL 2025: ভারতের যুব বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক, বিরাট কোহলির সতীর্থ এবার আইপিএলের আম্পায়ার
১৯৮৩ সালে ভারতকে প্রথম বিশ্বকাপ জেতানো কপিল তাঁর খেলোয়াড় জীবনের কথা তুলে ধরেন এক্ষেত্রে এবং তাঁর সময়ে ক্রিকেটাররা পেশাদার দায়িত্ব এবং ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে কীভাবে ভারসাম্য বজায় রাখতেন, তা ব্যাখ্যা করেছেন।
কপিল বলেন, ‘আমাদের সময়ে আমরা নিজেরাই এটা বলাবলি করতাম, ক্রিকেট বোর্ডকে বলে দিতে হতো না। আমাদের বিশ্বাস ছিল যে, সফরের প্রথমার্ধে ক্রিকেট প্রাধান্য পাওয়া উচিত। দ্বিতীয়ার্ধে পরিবার এসে খোলায়ড়দের সঙ্গে সময় উপভোগ করতে পারে। একটা ভারসাম্য থাকা উচিত।
সদ্য সমাপ্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সময়ে বিরাট কোহলি, রবীন্দ্র জাদেজা এবং মহম্মদ শামির পরিবার তাঁদের সঙ্গে দুবাইয়ে ছিল। তবে, পরিবারের লোকজন টিম হোটেলে থাকার বদলে নিজেদের খরচে অন্যত্র থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যদিও কোহলির মতামত সামনে আসার পরে বিসিসিআই নিজেদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পারে।