দাদার জন্য মন ছুঁয়ে নেওয়া বিশেষ বার্তা পাঠালেন ভারতীয় দলের তরুণ ব্যাটার যশস্বী জয়সওয়াল। গত সপ্তাহেই ২৭ বছরের এই তরুণ ব্যাটার তেজস্বী জয়সওয়াল নিজের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম অর্ধশতরান হাঁকিয়েছেন। এরপরেই অস্ট্রেলিয়া থেকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান তেজস্বীর ভাই যশস্বী জয়সওয়াল। সেই বার্তায় ছিল দুই ভাইয়ের জীবন লড়াইয়ের কাহিনি।
আসলে উত্তর প্রদেশের ভাদোইয়ে হার্ডওয়্যারের দোকান ছিল যশস্বী ও তেজস্বীর বাবার। কিন্তু ক্রিকেটার হওয়ার ইচ্ছেতেই মুম্বইয়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন যশস্বী ও তেজস্বী। মুম্বইয়ের আজাদ ময়দানে টেন্টে থেকেই ক্রিকেটার হওয়ার লড়াইও শুরু হয়েছিল। কিন্তু মাত্র ১৭ বছর বয়সেই ভাই যশস্বীর স্বপ্নকে সফল করার জন্য নিজের ক্রিকেট ছেড়ে দেন তেজস্বী। মুম্বইয়ের ঘরোয়া ক্রিকেটে যখন একের পর এক রেকর্ড ভাঙছেন যশস্বী, তখন অন্য়দিকে সেলসম্য়ানের কাজ করে সংসারের হাল ধরেছিলেন তেজস্বী। বাবার হাতে হাতে মিলিয়ে দুই বোনের বিয়েও দিয়েছিলেন।
এবার আবার নিজের স্বপ্নপূরণ করতে বাইশ গজে নেমেছেন তেজস্বী জয়সওয়াল। গত সপ্তাহেই ২৭ বছরের এই তরুণ ব্যাটার নিজের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম অর্ধশতরান হাঁকিয়েছেন। এরপরেই ভারতীয় দলের তরুণ ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল দাদাকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। দাদাকে ফোন করে আবেগঘন বার্তায় যশস্বী বলেন, ‘তুই সকলের জন্য অনেক করেছিস, সবার জন্য ভেবেছিলি। প্রচুর আত্মত্যাগ করেছিস। কিন্তু এখন তোর সময় এটা। উপভোগ কর সময়টা।’
বঢোদরার বিরুদ্ধে ৮২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তেজস্বী। এরপরই ভাইয়ের ফোন এসেছিল। সেই ফোনেই যেন বাড়তি আত্মবিশ্বাস পেয়েছেন ২৭ বছরের তরুণ ক্রিকেটার। তেজস্বী এরপরে বলেন, ‘আমিও ক্রিকেট খেলতে চাইতাম। কিন্তু পরিবারের হাল ভালো ছিল না। ওদিকে যশস্বী দারুণ ক্রিকেট খেলত। তাই ২০১৩ সালের শেষের দিকে আমি খেলা ছেড়ে দিই একই সঙ্গে মুম্বই ছেড়ে দিল্লি চলে এসে এখানে দোকানের কর্মচারী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলাম।’
শুধু মাত্র আর্থিক সমস্যা নয় তেজস্বীর ক্রিকেট কেরিয়ারের শুরুতেই সঙ্গী ছিল বিতর্ক। বয়স ভাঁড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। তেজস্বী বলছেন, ‘মুম্বইয়ে হ্যারিস শিল্ড ট্রফিতে একটি ম্য়াচ খেলেছিলাম। সাত উইকেটও নিয়েছিলাম। কিন্তু সকলেই বলতে শুরু করল আমি বয়স ভাঁড়িয়েছি। এরপর দেড় বছর টানা খেলার সুযোগ পাইনি। কিন্তু যশস্বী সেই সময় ভালো খেলছিল। আমি কখনও চাইনি ওর কেরিয়ারে কোনও বাধা তৈরি হোক। মুম্বইয়ে সেই সময় থাকাটাও আমাদের পক্ষে কষ্টের ছিল।’
ভাই এই মুহূর্তে ভারতীয় ক্রিকেটের উঠতি তারকা। কিন্তু নিজেও ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন দেখতেন ছোট থেকেই। পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি একেবারেই ভালো ছিল না। তাই নিজের ক্রিকেটের স্বপ্ন তখন জলাঞ্জলি দিতে হয়েছিল। তবে আবার সে নিজের স্বপ্নকে বাঁচাতে চাইছে তেজস্বী জয়সওয়াল।