সাদা বলের ক্রিকেটে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে দলে রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যুবরাজ সিং। ৩৭ বছর বয়সী স্পিনারকে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতে খেলার অযোগ্য বলে দাবি করেছেন যুবি। অশ্বিনের সীমিত ওভারের দলে জায়গা পাওয়াটা বরাবরই কিছুটা রোলার-কোস্টার রাইডই ছিল। প্রথমে ২০১৭ সালে কুলদীপ যাদব এবং যুজবেন্দ্র চাহালের কাছে নিজের জায়গা হারান অশ্বিন।
সাদা বলের ক্রিকেটে ২০১৭ থেকে তাঁর উপস্থিতি কখনও ধারাবাহিক ছিল না। অশ্বিন শেষ বার ২০২৩ ওডিআই বিশ্বকাপের দলে ছিলেন। তবে অক্ষর প্যাটেল চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ার পর, তাঁর বদলি হিসেবে শেষ মুহূর্তে তাঁকে দলে রাখা হয়। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে গোটা টুর্নামেন্টে মাত্র একটি ম্যাচই খেলেন অশ্বিন। বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম ম্যাচেই চেন্নাইয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৩৪ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছিলেন অশ্বিন। তার পর আর তাঁকে খেলানো হয়নি।
আরও পড়ুন: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে রাহুলকে উইকেটকিপার হিসেবে খেলানো হবে না, তবে কী ছক কষছে ভারত?
ভারতীয় দল স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে যে, লোয়ার অর্ডারে সেই সব বোলাররাই অগ্রাধিকার পাবেন, যাঁরা ব্যাট করতে পারেন। অশ্বিনের পাঁচটি টেস্ট সেঞ্চুরি রয়েছে। তবে যুবরাজের মতে, ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টিতে তাঁকে জায়গা দেওয়াটা মোটেও সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। অশ্বিনের ব্যাটিং এবং ফিল্ডিং অবদানের দিকে আঙুল তুলেছেন যুবি।
টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে এর সাক্ষাৎকারে যুবরাজ বলেছেন, ‘অশ্বিন একজন দুর্দান্ত বোলার। কিন্তু আমি মনে করি না যে, ওডিআই এবং টি-টোয়েন্টিতে ও জায়গা পাওয়ার যোগ্য। ও বল হাতে খুব ভালো, কিন্তু ব্যাটার বা ফিল্ডার হিসেবে ওর অবদান কী? টেস্ট দলে, হ্যাঁ, ওর সেখানে থাকা উচিত। কিন্তু সাদা বলের ক্রিকেটে, আমি মনে করি না, ও জায়গা পাওয়ার যোগ্য।’
ওডিআই এবং টি-টোয়েন্টিতে অশ্বিনের ভাগ্যের ওঠানামা
২০১১ থেকে ২০১৭-এর শুরু পর্যন্ত অশ্বিন ভারতীয় দলে সাদা-বলের সেট-আপের একটি অপরিহার্য অংশ ছিলেন। ১১৬টি ওয়ানডেতে ১৫৬টি উইকেট নিয়ে ফেলেছিলেন। এবং ৬৫টি টি-টোয়েন্টিতে ৭২ স্ট্রাইক ছল তাঁর। কিন্তু বিরাট কোহলি যখন অধিনায়ক হন, তখন ‘কুল-চা’-এর উত্থানের কারণে পিকিং অর্ডারে পিছিয়ে পড়েছিলেন অশ্বিন। এমন কী যখন কুলদীপ এবং চাহাল বিবর্ণ হতে শুরু করেন, তখনও ভারত সক্রিয় ভাবে অশ্বিনের কাছে ফিরে যায়নি। যাইহোক, যখন বিশ্বকাপের কথা আসে, অশ্বিন দল থেকে বাদ পড়েন।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অশ্বিনকে দলে রাখা হয়। যুজবেন্দ্র চাহালকে বাদ দেওয়া হয়। পাকিস্তান এবং নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলাগুলি মিস করলেও, তিনি ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি খেলার আগে আফগানিস্তান, স্কটল্যান্ড এবং নামিবিয়ার বিরুদ্ধেও খেলেছিলেন। অশ্বিনকে হঠাৎ করেই ২০২১ এবং ২০২২ সালের নভেম্বরের মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে কিছুটা বেশি খেলানো হয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে ছ'টি ম্যাচ সহ ১৯টি ম্যাচ খেলেছিলেন। এর পর তিনি বাদ পড়েন এবং তার পর থেকে ভারতের হয়ে সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে ফিরে আসেননি।
গত সাত বছরে অশ্বিনের ওডিআই গল্প আরও আকর্ষণীয়। ২০১৭ সালের পর, অশ্বিনকে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ওডিআইয়ের জন্য ডাকা হয়েছিল এবং তিনি আবার অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিলেন। এবং অবাক হওয়ার কিছু নেই, বিশ্বকাপের ঠিক আগে তিনি ফের দলে ফিরে এসেছিলেন।