২০০৭-এর পরে এবার ২০২৪, দীর্ঘ ১৭ বছরেও যে ছবিটা এতটুকু বদলায়নি, বুঝিয়ে দিলেন যুবরাজ সিং, রবিন উথাপ্পা, ইরফান পাঠানরা। বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার ত্রাস হয়েই রয়ে গেলেন যুবিরা। ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ধ্বংসাত্মক ইনিংস খেলেন যুবরাজ-উথাপ্পা। এবার ২০২৪ সালে এসে কিংবদন্তিদের বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপেও হুবহু একই মেজাজে মারকাটারি হাফ-সেঞ্চুরি করেন যুবি ও রবিন।
২০০৭ সালের টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যুবরাজ সিংয়ের পারফর্ম্যান্স
২০০৭ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ডারবানে টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে সম্মুখসমরে নামে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। সেই ম্যাচে টস জিতে ভারত শুরুতে ব্যাট করতে নামে। টিম ইন্ডিয়া নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটের বিনিময়ে ১৮৮ রানের বড়সড় ইনিংস গড়ে তোলে।
ভারতকে লড়াইয়ের রসদ এনে দিতে ব্যাট হাতে প্রধান ভূমিকা নেন যুবরাজ সিং। তিনি ৩টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে মাত্র ২০ বলে মারকাটারি হাফ-সেঞ্চুরি করেন। শেষমেশ ৫টি চার ও ৫টি ছক্কার সাহায্যে ৩০ বলে ৭০ রানের ধ্বংসাত্মক ইনিংস খেলে আউট হন যুবি।
ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অফ লেজেন্ডস ২০২৪-এর সেমিফাইনালে যুবরাজ সিংয়ের পারফর্ম্যান্স
এবার ২০২৪ সালের ১২ জুলাই নর্দাম্পটনের কাউন্টি গ্রাউন্ডে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অফ লেজেন্ডসের সেমিফাইনালে সম্মুখসমরে নামে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নামে ইন্ডিয়া চ্যাম্পিয়ন্স দল। তারা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ২৫৪ রানের বিশাল ইনিংস গড়ে তোলে।
যুবরাজ সিং ৪টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে মাত্র ২৬ বলে ব্যক্তিগত হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। শেষমেশ ২৮ বলে ৫৯ রানের ধুমধাড়াক্কা ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন যুবি। তিনি ৪টি চার ও ৫টি ছক্কা মারেন।
২০০৭-এর টি-২০ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের কোন কোন ভারতীয় ক্রিকেটার এই ম্যাচে মাঠে নামেন
যুবরাজ সিং ছাড়াও ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মাঠে নামা রবিন উথাপ্পা, ইরফান পাঠান ও হরভজন সিং মাঠে নামেন এই ম্যাচে। লেজেন্ডস লিগের স্কোয়াডে থাকা আরপি সিংও ২০০৭-এর সেমিফাইনালে মাঠে নামেন ভারতের হয়ে।
রবীন উথাপ্পা ২০০৭-এর টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ১টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ২৮ বলে ৩৪ রান করেন। এবার ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অফ লেজেন্ডসের সেমিফাইনালে উথাপ্পা ৬টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৩৫ বলে ৬৫ রানের আগ্রাসী ইনিংস খেলেন।
ইরফান পাঠান ২০০৭ টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ব্যাট করতে নামলেও ১ বলে কোনও রান না করেই অপরাজিত থাকেন। এবার ইরফান কিংবদন্তিদের বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের এই ম্যাচে ৩টি চার ও ৫টি ছক্কার সাহায্যে ১৯ বলে ৫০ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে আউট হন। ইরফান ২০০৭ সালে ৪ ওভার বল করে ৪৪ রানের বিনিময়ে ২টি উইকেটও তুলে নেন।
বোনাস হিসেবে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অফ লেজেন্ডস ২০২৪-এর সেমিফাইনাল ম্যাচে ঝোড়ো হাফ-সেঞ্চুরি করেন ইউসুফ পাঠান, যিনি ২০০৭ সালের টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের হয়ে প্রথমবার আন্তর্জাতিক ম্যাচে মাঠে নামেন। ভাই ইরফানের পাশাপাশি ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালান ইউসুফ। তিনি ৪টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে ২৩ বলে ৫১ রান করে অপরাজিত থাকেন।
তফাৎ হল, ২০০৭ সালে টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ব্রেট লি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুরন্ত বল করেন। তিনি উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে মোটে ২৫ রান খরচ করেন। এবার ২০২৪ এর লেজেন্ডস লিগের সেমিফাইনালে ব্রেট লি ৪ ওভারে ৬০ রান খরচ করেন। এবারও কোনও উইকেট জোটেনি তাঁর ভাগ্যে।