অ্যাওয়ে ম্যাচে টস-ভাগ্য সঙ্গ না দিলে অতিথি দলের কাছে কাজ আরও কঠিন হয়ে ওঠে। মঙ্গলবার মুল্লানপুরে ঠিক তেমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্সের সামনে। তবে সেই প্রতিকূলতা কাটিয়ে কেকেআর বল হাতে হোম টিমের মতো পারফর্ম্যান্স মেলে ধরে। ব্য়াট হাতে ঘরের মাঠে ল্যাজেগোবরে হয় পঞ্জাব। তবে কেকেআর পালটা ব্যাট করতে নেমে চূড়ান্ত ভরাডুবির মুখে পড়ে এবং পঞ্জাব হোম টিমের মতোই দাপট দেখিয়ে ইতিহাস গড়ে।
মুল্লানপুরে কেকেআরের বিরুদ্ধে আইপিএল ২০২৫-এর হাই-ভোল্টেজ ম্যাচে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নামে পঞ্জাব। তবে নিয়মিত অন্তরে উইকেট খোয়াতে থাকায় বড় রানের ইনিংস গড়া সম্ভব হয়নি তাদের পক্ষে। পঞ্জাব কোনও রকমে ১০০ রানের গণ্ডি টপকেই অল-আউট হয়। ১৫.৩ ওভারে ১১১ রানে গুটিয়ে যায় শ্রেয়স আইয়ারদের ইনিংস। কেকেআরের বিরুদ্ধে আইপিএলে এটিই পঞ্জাবের সব থেকে কম রানের দলগত ইনিংস।
মঙ্গলবার কেকেআরের বিরুদ্ধে প্রভসিমরন সিং পঞ্জাবের হয়ে সব থেকে বেশি ৩০ রান করেন। প্রিয়াংশ আর্য ২২ ও শশাঙ্ক সিং ১৮ রানের যোগদান রাখেন। শূন্য রানে আউট হন শ্রেয়স আইয়ার। এছাড়া জোশ ইংলিস ২, নেহাল ওয়াধেরা ১০, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৭, সূর্যাংশ শেজ ৪, মারকো জানসেন ১, জেভিয়ার বার্টলেট ১১ ও আর্শদীপ সিং ১ রান করেন।
কেকেআরের হয়ে ২৫ রানে ৩টি উইকেট নেন হর্ষিত রানা। ১৪ রানে ২টি উইকেট নেন সুনীল নারিন। ২১ রানে ২টি উইকেট নেন বরুণ চক্রবর্তী। ১টি করে উইকেট নেন বৈভব আরোরা ও এনরিখ নরকিয়া।
জয়ের লক্ষ্য স্থির হতেই কেকেআরের চোখ পড়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপরে। ১৪.১ ওভার বা তারও কম সময়ে ম্যাচ জিতলে কেকেআরের সামনে সুযোগ ছিল লিগ টেবিলের এক নম্বরে উঠে আসার। তবে শুরুতেই পরপর উইকেট হারিয়ে বসায় ডাকাবুকো হওয়ার উপায় ছিল না অজিঙ্কা রাহানেদের সামনে।
সব থেকে কম রান রক্ষা করে ম্যাচ জয় পঞ্জাবের
বরং একের পর এক উইকেট হারিয়ে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ে কেকেআর। শেষমেশ নাইট রাইডার্স ১৫.১ ওভারে ৯৫ রানে অল-আউট হয়ে ম্যাচ হেরে বসে। আইপিএলে নিজেদের তৃতীয় নিন্মতম দলগত ইনিংসের লজ্জাজনক রেকর্ড গড়ে হতাশাজনক হারের মুখ দেখে কলকাতা। পঞ্জাব কিংস আইপিএলের ইতিহাসে সব থেকে কম রানের ইনিংস রক্ষা করার সর্বকালীন রেকর্ড গড়ে। তারা ম্যাচ জেতে ১৬ রানের ব্যবধানে। পঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে আইপিএলে এটিই কেকেআরের সব থেকে কম রানের ইনিংস।
আউট ছিলেন না, রিভিউ না নিয়েই সাজঘরে ফেরেন রাহানে
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, কেকেআর একসময় ২ উইকেটে ৬২ রান তুলে ফেলে। সেই সময় কলকাতার জয় কার্যত নিশ্চিত দেখাচ্ছিল। তবে ৭.৪ ওভারে যুজবেন্দ্র চাহালের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে অজিঙ্কা রাহানে সাজঘরে ফেরার পরেই ছবিটা মুহূর্তে বদলে যায়। রাহানে আদৌ এলবিডব্লিউ ছিলেন না। বল পিচড হয় স্টাম্প লাইনের বাইরে। রাহানের প্যাডেও লাগে স্টাম্প লাইনের বাইরে। অর্থাৎ, রাহানে রিভিউ নিলে বেঁচে যেতেন। তবে তিনি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নন-স্ট্রাইকার ব্যাটার অংকৃষ রঘুবংশীর সঙ্গে আলোচনা করেও রিভিউ নেননি। শেষমেশ রাহানের চ্যারিটি উইকেটের মাশুল দিতে হয় কেকেআরকে।
কেকেআরের হয়ে অংকৃষ রঘুবংশী ৩৭ রান করেন। অজিঙ্কা রাহানে ও আন্দ্রে রাসেল উভয়েই ব্যক্তিগত ১৭ রানের মাথায় আউট হন। কুইন্টন ডি'কক ২, সুনীল নারিন ৫, বেঙ্কটেশ আইয়ার ৭, রিঙ্কু সিং ২ ও হর্ষিত রানা ৩ রান করেন। খাতা খুলতে পারেননি রমনদীপ সিং ও বৈভব আরোরা। কোনও বল খেলার সুযোগ পাননি এনরিখ নরকিয়া।
পঞ্জাবের হয়ে ২৮ রানে ৪ উইকেট নেন যুজবেন্দ্র চাহাল। ম্যাচের সেরা হন তিনি। ১৭ রানে ৩ উইকেট নেন মারকো জানসেন। ১টি করে উইকেট নেন জেভিয়ার বার্টলেট, আর্শদীপ সিং ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।