ভোটের মুখে নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে দলেরই কর্মী খুনে অভিযুক্ত জেলবন্দি বিজেপি নেতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে তৃণমূলের একাংশে। এই নিয়ে মমতাকে বিঁধতে ছাড়েনি বিজেপিও।
এদিনের বিতর্কের মূল চরিত্র। বিজেপি নেতা আনিসুর রহমান। ২০১৯ সালের অক্টোবরে তৃণমূল নেতা কোরবান শাহকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হন তিনি। তার পর থেকে দেড় বছর জেলেই রয়েছেন আনিসুর। এই আনিসুরের মোটরসাইকেলে চড়েই ২০০৭ সালের ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামে গুলিচালনার পর তমলুক হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক কার্যকরী সভাপতি কোরবান শাহকে খুনে নাম জড়ায় আনিসুরের। ওই বছরই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবার মমতার মুখে শোনা যায় তৃণমূল নেতা খুনে অভিযুক্ত বিজেপি নেতা আনিসুরের নাম।
এদিন তৃণমূলনেত্রী বলেন, সেদিন কিছুতেই আমাকে নন্দীগ্রামে যেতে দেবে না। আমি তখন আমার এক সহকর্মী যাকে অত্যাচার করে আজও জেলে রেখে দিয়েছে, পাঁশকুড়ার ছেলে আনিসুর, তাকে বললাম তোর স্কুটার বা বাইক আছে? কী করব বললাম না। বাইকে করে আমি আর ও বেরিয়ে পড়লাম। তার পর যেদিকেই যাই দেখি পথ আটকে বসে রয়েছে। গ্রামের ভিতরের রা্স্তা দিয়ে তমলুক হাসপাতালে পৌঁছলাম।
মমতার এই মন্তব্যে যেমন আশার আলো দেখছেন আনিসুরের পরিবার, তেমনই ক্ষোভে ফুঁসছেন কোরবানের স্বজনরা। আনিসুরের স্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার স্বামী নির্দোষ। ঘটনার সিআইডি তদন্ত হলেই সব সত্য সামনে আসবে।’
ওদিকে আফজলের পরিবারের দাবি, আনিসুরকে ছাড়ানোর জন্য সরকার যে ব্যবস্থা করছে তা আগেই বুঝতে পেরেছি। ওই মামলার সরকারি আইনজীবী ও তদন্তকারী আধিকারিক বদলে দেওয়া হয়েছে। দিদির ওপর আমাদের ভরসা রয়েছে। তবে ইনি আনিসুরের পাশাপশি একবার কোরবানের নাম নিলে ভাল লাগত।
তৃণমূলনেত্রীর মুখে আনিসুরের নাম শুনে তাঁকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়। সোমবার দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এক জনসভায় তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই আনিসুর আপনাকে মোটরবাইকে নিয়ে এসেছিল। কালকে হয়তো তৃণমূলের পতাকা বইবে। সে ভারতী জনতা পার্টিতে যোগদান করায় আপনার স্বার্থপরতার জন্য তাঁকে আপনার সরকারের কেসে জেলে ভরা হয়েছে। কালকে দেখবো আনিসুরকে আপনি জেল থেকে বার করে এনে ব্যবহার করছেন।’