দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মত বদলেছিলেন তিনি। তার পর কয়েক ঘণ্টা কাটতে না কাটতে ফেসবুকে পোস্ট করে দল ও নেতৃত্বের প্রতি নিজের আনুগত্য প্রমাণের মরিয়া চেষ্টা চালালেন বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়। শনিবার সকালে ফেসবুকে পোস্ট করে তিনি ভোটের আগে দলীয় কর্মীদের একজোট হওয়ার বার্তা দেন। জানান, ক্ষোভ – বিক্ষোভ আমরা দলের মধ্যেই মেটাবো।
বৃহস্পতিবার দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্ট করেন শতাব্দী। জানান, সাংসদ হলেও তাঁকে দলীয় কর্মসূচিতে ব্রাত্য রাখা হচ্ছে। মানুষের কাছে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকী শনিবার তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত জানাবেন বলেও ঘোষণা করেন শতাব্দী। শুক্রবার সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান শনিবার দিল্লি যাচ্ছেন তিনি। সেখানে সাক্ষাৎ হতে পারে অমিত শাহে সঙ্গেও। এর পরই তাঁর বাড়িতে পৌঁছন তৃণমূলের প্রতিনিধি কুণাল ঘোষ। শতাব্দীকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসার প্রস্তাব দেন তিনি। বৈঠকে বসতে রাজি হন শতাব্দী। বিকেলে ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে ২ জনের বৈঠক হয়। বেরিয়ে জানান, তৃণমূলেই থাকছেন তিনি।
এদিন সকালে শতাব্দী ‘বীরভূমের নাগরিক’-দের উদ্দেশে লেখেন, ‘আমাকে কয়েকজন প্রশ্ন করছিলেন কেন এলাকার বহু কর্মসূচিতে আমাকে দেখা যাচ্ছে না। অথচ আমি তো চাই এলাকার মানুষের পাশে থাকতে। কিছু সমস্যা হচ্ছে। কিছু যন্ত্রণা অনুভব করছিলাম। চেষ্টা করছি সব বাধা টপকে এলাকায় সবসময় থাকার। বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে জানিয়েছিলাম আপনাদের।’
এর পরই সাংসদ সাম্প্রতিক ঘটনাক্রমের উল্লেখ করেন। বলেন, ‘এই সূত্রেই কিছু বহুমুখী ঘটনা ঘটছিল। শেষ পর্যন্ত তৃণমূল পরিবারের প্রিয় নেতা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার সবিস্তারে আলোচনা হয়েছে। আমি সমস্যার জায়গাগুলি জানিয়েছি। তিনিও শুনেছেন এবং আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনা ইতিবাচক। সমস্যার সমাধান হবে বলে আমি আশাবাদী। সামনে নির্বাচন। যাঁরা তৃণমূলের কর্মী বা নেতা, আমার মতই তাঁদের কিছু ক্ষোভ বা বক্তব্য থাকতেই পারে। আমরা সেগুলি দলের মধ্যেই মেটাবো।ভোটে জয়ের পর পর্যালোচনা করব। এখন সবাই হাতে হাত মিলিয়ে লড়াই করার সময়। আসুন সবাই মমতাদির নেতৃত্বে তৃতীয় তৃণমূল সরকার গঠনের লক্ষ্যে বাংলার স্বার্থে কাজ করি।’
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও প্রশংসায় ভরিয়ে দেন সাংসদ। বলেন, ‘আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ দিচ্ছি। যেভাবে তিনি সমস্যা শুনেছেন, আলোচনা করেছেন, পরামর্শ দিয়েছেন, তাতে আমি নিশ্চিত তরুণ নেতাটি এখন যথেষ্ট দায়িত্বশীল ও পরিণত। নতুন প্রজন্মের এমন নেতার নেতৃত্ব দলকে শক্তিশালী করবে।’