যে ‘ঘোষণা’ হতে চলেছে বলে অনেকে ভেবেছিলেন, তা নিয়ে মুখ খুললেন না। তবে সেই সম্ভাবনা উড়িয়েও দিলেন না বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বরং জানালেন, আপাতত তাঁর ‘ধৈর্যচ্যুতি’ ঘটেনি। এখনও ‘ধৈর্য’ ধরে আছেন। রাজনৈতিক মহলের জল্পনা, ‘ধৈর্য’ ভাঙলে কি তাহলে তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়বেন রাজীব? তার আগে কি মিটমাটের পথও খোলা রাখলেন?
শনিবার ফেসবুক লাইভে রাজীব কী বলেন, তা নিয়ে জল্পনা চলছিল। ‘বড়সড়’ কিছু ঘোষণা করতে পারেন বলে ছড়িয়েছিল গুঞ্জন। রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূলের তরফেও যে ‘খারাপ’ কিছুর আশঙ্কা করা হয়নি, তা নয়। যদিও ৩৪ মিনিটের ২৩ সেকেন্ডে কোনও রহস্য ভাঙলেন না রাজীব। দলের একটি অংশের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করলেও বিজেপিতে যোগ দেওয়ার যে জল্পনা ছড়িয়েছে, তা নিয়েও কোনও মন্তব্য করলেন না। বরং এখনই য়ে তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করছেন না, তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
লাইভের শেষলগ্নে এক শুভান্যুধায়ীর শুভ কামনার প্রসঙ্গে রাজীব বলেন, ‘মানুষের ধীরস্থির থাকা উচিত। ধৈর্য ধরা উচিত। স্বামী বিবেকানন্দ শিখিয়ে গিয়েছেন। সুতরাং এখনও অবধি বলতে পারেন, আমি ধৈর্য ধরে আছি। আমার এখনও অবধি ধৈর্যচ্যুতি ঘটেনি। আমি এখনও অবধি ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছি এবং এখনও পর্যন্ত আপনাদের জন্য ধৈর্য ধরে আছি।সুতরাং আজ আমি নতুন করে আর কিছু বলব না।’
রাজনৈতিক মহলের মতে, ‘ধৈর্য’ ধরে আছেন বলে দলকেই বার্তা দিতে চেয়েছেন রাজীব। দু'দফায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক পুরোপুরি ফলপ্রসূ না হলেও তৃণমূলের সঙ্গে আলোচনার রাস্তা খুলে রেখে দিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ তৃণমূলের কোর্টেই বল ঠেলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তাঁর ‘ধৈর্যচ্যুতি’ ঘটবে কি ঘটবে না, তা ঘাসফুল শিবিরের উপর নির্ভর করবে। ‘ধৈর্যচ্যুতি’ ঘটলে মানুষের পছন্দ মতোই এগিয়ে যাবেন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজীব।
তবে ফেসবুক লাইভে রাজীবের ক্ষোভ প্রকাশের বিষয়টি ভালোভাবে নিচ্ছে না তৃণমূল। পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, দলে থাকলে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। কেউ রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য হলে সেখানেই কোনও বিষয় নিয়ে মুখ খোলা ভালো। একইসুরে তৃণমূলের সাংসদ সৌগত রায় জানান, দলের কথা দলেই বলতে পারতেন রাজীব। যদিও তাতে কোনও ভুল দেখছেন না রাজীব। তিনি জানান, নিজের অনুগামী ও শুভান্যুধায়ীর সঙ্গে কথা বলেছেন মাত্র।
তারইমধ্যে ঘোলা জলে মাছ ধরতে কসুর ছাড়ছে না বিজেপি। শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সরাসরি রাজীবকে আহ্বান জানিয়েছেন। শুভেন্দু জানান, তিনি বেরিয়ে এসেছেন। যাঁরা ‘তৃণমূল কংগ্রেস প্রাইভেট লিমিটেডে’ কর্মী হিসেবে থাকতে চান না, তাঁরাও বেরিয়ে আসতে পারেন। যদিও সেই প্রসঙ্গে রাজীব জানান, অন্য দলের কারও কথায় মন্তব্য চান না তিনি।