প্রথমে পটনায় হয় বৈঠক, তারপর বেঙ্গালুরুতে গড়ে ওঠে 'ইন্ডিয়া' জোট। বিজেপিকে হারাতে বিরোধীদের এই বৃহত্তর জোটের সবথেকে বড় দল কংগ্রেস। এই জোটে আছে তৃণমূল কংগ্রেসও। এই আবহে জোটের স্বার্থে কি বাংলায় লড়াই করবে না কংগ্রেস? গতকাল বিধানভবনে এই প্রশ্নেরই মুখোমুখি হতে হয়েছিল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভা কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে। আর সেই প্রশ্নের জবাবে অধীর সোজা জানিয়ে দিলেন, লড়াই করা হবে না, এমন কোনও কথা তাঁর জানা নেই।
গতকাল কলকাতায় বিধান ভবনে কংগ্রেসের জেলা সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক করেন অধীর চৌধুরী। এই রাজ্যে তৃণমূলের থেকে বামেদের বেশি কাছে কংগ্রেস। আবার জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে সোনিয়া-মমতা রসায়ন পৃথক। এই আবহে বাংলায় কংগ্রেসের নীচি তলার কর্মীরা কোনদিকে যাবেন? এদিকে বেঙ্গালুরুতে ইন্ডিয়া জোট গঠনের আগেই রাজ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছিল পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাতে বহু কংগ্রেস কর্মীর রক্ত ঝরেছিল। এদিকে সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে জেতা বিধায়ক তৃণমূলে গিয়ে যোগ দেন। সব মিলিয়ে এ রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের তিক্ততার অন্ত নেই। এই আবহে রাজ্য রাজনীতির প্রেক্ষিতে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন অধীর।
গতকাল অধীর বলেন, 'কংগ্রেস নিজেদের মতো লড়াই করছে। আমাদের অবস্থান যদি বদল হয়, তাহলে তা সবাই দেখতে পাবেন। এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেস চালান। তিনি নিজের দলের জন্য ৪২টি আসন চাইতে পারেন আবার ৪২০টাও চাইতে পারেন। তবে কংগ্রেস কোনও রাজ্যে আসন ছেড়ে দিয়ে লড়াই করবে বলে জানি না আমি।' এর আগে রাজ্যকে 'পুকুর' এবং দেশকে 'নদী' আখ্যা দিয়ে অধীর বলেছিলেন, এখন পুকুরের থেকে বেশি নদীর কথা ভাবতে হচ্ছে। এদিকে সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'এরাজ্যে ইন্ডিয়া জোটের পক্ষে সব ভোট যেন তৃণমূলের কাছে আসে'। এই পরিস্থিতিতে অধীর চৌধুরীর বক্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
এর আগে তৃণমূল নেত্রী মমতার সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা গিয়েছিল সীতারাম ইয়েচুরিকে। তা নিয়ে রাজ্যের বাম কর্মীদের মনে প্রশ্ন জেগেছিল। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে বামেদের শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়ে দেয়, এই রাজ্যে তৃণমূলের সঙ্গে জোট করবে না তারা। তবে বেঙ্গালুরুর বৈঠকে রাহুল ও সোনিয়ার সঙ্গে মমতার যে রসায়ন দেখা গেল, তাতে কংগ্রেস সরাসরি তৃণমূলের বিরোধিতা করবে বলেও মনে হয় না।