২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে ষষ্ঠ দফায় হবে মেদিনীপুরে ভোটগ্রহণ। একই দিনে তমলুক, কাঁথি, ঘাটালেও হবে নির্বাচন। চার কেন্দ্রেই একাধিক তারকা প্রার্থীরা রয়েছেন। কাঁথিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌম্যেন্দু অধিকারী লড়ছেন বিজেপির টিকিটে, পাশের আসন তমলুকে বিজেপির প্রার্থী প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের দেবাংশু ভট্টাচার্য। ঘাটালে লড়াইয়ে দেব এবং হিরণ চট্টোপাধ্যায়। যদিও সকলের নজরে রয়েছে মেদিনীপুর কেন্দ্র। কারণ এই কেন্দ্রই এক সময় ছিল দিলীপ ঘোষের গড়। তিনি গতবার এই কেন্দ্র থেকে ভোটে জিতলেও তাঁকে এবারে সেখান থেকে টিকিট দেওয়া হয়নি। দিলীপ ঘোষকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বর্ধমান দুর্গাপুরে অথচ আসানসোল থেকেই প্রার্থী এনে মেদিনীপুরে দিয়েছে বিজেপি। ফলে বিষয়টা নিয়ে দলের নিচু স্তরের কর্মিদের মধ্যে চাপা অসন্তোষ ছিলই। সেই কেন্দ্রে এবার রয়েছে হেভিওয়েট টক্কর। মুখোমুখি তৃণমূলের বিধায়ক জুন মালিয়া এবং বিজেপির অগ্নিমিত্রা পাল।
এই আবহেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মেদিনীপুরের সভা থেকে এক হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন সকলকে। অগ্নিমিত্রা, হিরনদের পাশে বসিয়েই দিলীপ ঘোষের ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। মেদিনীপুরে দিলীপের হাতে যে প্রচুর ভোটব্যঙ্ক রয়েছে সেকথা বলাই বাহুল্য। এর আগে মেদিনীপুর সদর থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন তিনি। পরে লোকসভা নির্বাচনে মানস ভুঁইয়াকে প্রায় ৮৯ হাজার ভোটে হারিয়ে দেন দিলীপ। এবারে অগ্নিমিত্রা পাল আসায় তা নিয়ে আঞ্চলিক নেতাদের মধ্যে একটা যে অসন্তোষ ছিল, তা বোঝা গেছে অগ্নিমিত্রার কথায়। HT বাংলাকে সাক্ষাৎকারে তিনি অবশ্য জানিয়েছেন এখন সবাই এক হয়েই কাজ করছেন।
আরও পড়ুন-HT Bangla Exclusive-ব্যারাকপুরে শান্তিদূত হতে চান সিপিএমের দেবদূত
প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন আপনার প্রচারে, কী বললেন?
অগ্নিমিত্রা পাল- জানতে চাইলেন সব ঠিক ঠাক চলছে কিনা, কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। কিছু প্রয়োজন কিনা, প্রচার ঠিক মতো হচ্ছে কিনা।
প্রসঙ্গ, দিলীপ ঘোষের ডেরা , শুরুর দিকে তো চাপা অসন্তোষ ছিল?
অগ্নিমিত্রা পাল-প্রথমে যখন এখানে এসেছিলাম, এখানে সকলের মনটা খারাপ ছিল। আমার নিজের কেন্দ্র আসানসোলের মানুষেরও মন খারাপ ছিল। সেটা স্বাভাবিক ব্যাপার।
প্রসঙ্গ, এখন মানিয়ে নিতে পেরেছে আপনার সঙ্গে?
অগ্নিমিত্রা পাল-এখন অনেকটা সময় কেটে গেছে। এরপর আমায় নতুন উদ্যমে সকলে গ্রহণ করে নেয়, খুব ভালো রেসপন্স পেয়েছি। ওরা প্রত্যেকে খুব খুশি। কোনও কার্যকর্তাকে দেখে আর মনে হবে না দিলীপ দা চলে গেছে, তাই মন খারাপ। শেষ দেড়মাস ধরেই তাঁরা খুব ভালো করে কাজ করছে, সব রকমের সাহায্য করছে।
আরও পড়ুন-ভোটের সাতকাহন- ‘অর্জুন সুবিধা করতে পারবে না,ভোট মেশিনারি আমরাও বুঝি’-পার্থ ভোমিক
গতবার এই আসনে দিলীপ ঘোষের জেতার অন্যতম কারণ ছিল ওপর থেকে নিচ, সকল স্তরের নেতাদের সঙ্গেই তাঁর ব্যাপক জনসংযোগ। ঝাড়গ্রামে জন্ম হওয়ার পাশাপাশি আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ফলে গ্রাম বাংলার তৃণমূল স্তরের কর্মিদের সঙ্গে নিবিড় যোগ ছিল তাঁর। খড়গপুর সদর কেন্দ্র থেকে জিতে আসায়, মেদিনীপুর এলাকার রাজনীতির সম্পর্কেও ভালো ধারণা ছিল। এবার সেই কেন্দ্রেই তৃণমূলের হাইপ্রোফাইল প্রার্থী জুন মালিয়া, যিনি মেদিনীপুরের বিধায়ক। তাঁর বিরুদ্ধে অগ্নিমিত্রা পাল জয় তুলে আনতে পারেন কিনা সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।