দীর্ঘ তিনবছর পর গতকাল জনসভায় ভাষণ দেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী। সদ্য বিজেপি থেকে কংগ্রেসে যোগ দেওয়া জগদীশ শেটারের সমর্থনে হুবলিতে সেই জনসভায় বক্তৃতা দেন সোনিয়া। সেই সভা থেকে বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন সোনিয়া। তবে 'আরএসএস-এর লোক' জগদীশের হয়ে তিনি প্রচার করায় 'অসন্তুষ্ট' এআইএমআইএম প্রধান তথা হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। এই আবহে ওয়াইসি কংগ্রেসের নীতিবোধ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, 'আমি কোনওদিন ভাবিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবকের কোনও লোকের হয়ে প্রচার করবেন সোনিয়া গান্ধী।'
প্রসঙ্গত, টিকিট না পেয়ে ভোটের মুখে বিজেপি ছেড়েছিলেন কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ শেটার। ছ'বরারের বিধায়কের দলত্যাগ নিয়ে চিন্তায় রয়েছে বিজেপি। এদিকে জগদীশের যোগদান নিয়ে আশাবাদী কংগ্রেস। রাজ্যে বিজেপিকে হারানোর নতুন উদ্যম খুঁজে পেয়েছে তারা। উত্তর কর্ণাটকে মোটামুটি ২০টি আসনে প্রভাব রয়েছে জগদীশের। মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের গলাতেও শোনা গিয়েছিল সেই সুর। হুবলি-ধারওয়াড় অঞ্চলে বিজেপির ভোট শতাংশে প্রভাব পড়বে বলে অকপটে মেনে নিয়েছিলেন বোম্মাই। এহেন নেতার হয়ে রাহুল-সোনিয়া গতকাল প্রচার করেন। তবে তা নিয়ে খাপ্পা এআইএমআইএম প্রধান ওয়াইসি।
ওয়াইসি কংগ্রেসকে তোপ দেগে বলেন, 'জগদীশ শেটার তো আরএসএস-এর। ম্যাডাম সোনিয়াজি, আমি কোনওদিন ভাবিনি আপনি আরএসএস-এর লোকের হয়ে প্রচার করবেন। এটা খুবই লজ্জার বিষয় যে কংগ্রেস আদর্শের লড়াইয়ে ব্যর্থ হয়েছে। এবং তাদের জোকার, চাকর, দাসরা অভিযোগ করে, আমি নাকি বিজেপির বি টিম।' এদিকে কংগ্রেসের তরফে জগদীশকে টিকিট দেওয়া হয়েছে হুবলি-ধারওয়াড় সেন্ট্রাল আসন থেকে। তাঁর কংগ্রেসে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আগেও বিতর্ক হয়েছে। তবে কংগ্রেস দাবি করেছেন, জগদীশের আরএসএস যোগ থাকলেও তিনি 'ধর্ম নিরপেক্ষ'।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ছিলেন জগদীশ শেটার। এর আগে ২০১২ সালে একবছরের জন্য কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও কর্ণাটক বিধানসভার স্পিকার পদ সামলেছেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দফতরের দায়িত্বেও ছিলেন জগদীশ। এহেন হেভিওয়েট লিঙ্গায়াত নেতা এবার টিকিট না পেয়ে বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন। উল্লেখ্য, বিএস ইয়েদুরাপ্পাও লিঙ্গায়াত সম্প্রদায়ের। কর্ণাটকের সবথেকে বড় সম্প্রদায় এটি। এই সম্প্রদায় বিগত কয়েক দশক ধরে বিজেপিকেই সমর্থন করে এসেছে। তবে জগদীশের কংগ্রেস যোগে সেই সমর্থনে চিড় ধরতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বিজেপির অন্দরেও।