স্ত্রী নেই। আজ তাই একাই আসতে হল তাঁকে। শক্ত মনে ভিতরে ঢুকে ভোট দিলেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না। সাংবাদিকদের সামনে ভেঙে পড়লেন তিনি। চোখের জলে স্মৃতিকেই হাতড়ে গেলেন সিপিআইএমের পোড়খাওয়া নেতা অশোক ভট্টাচার্য। কারণ ২০২১ সালের অক্টোবর মাসেই স্ত্রী রত্না ভট্টাচার্য প্রয়াত হয়েছেন। তাই আজ, শনিবার শিলিগুড়ি পুরসভার নির্বাচনে রত্নাকে ছাড়াই ভোট দিতে এসে কেঁদে ফেললেন শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র।
ঠিক কী বলেছেন অশোকবাবু? শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ শিলিগুড়ি নেতাজি উচ্চবিদ্যালয়ে ২৬/২০১ নম্বর বুথে ভোট দেন অশোক ভট্টাচার্য। তারপর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘এই প্রথম একা ভোট দিতে এলাম। প্রয়াত স্ত্রীর ছবিতে মালা দিয়েই ভোট দিতে এসেছি। ও থাকলে খুব খুশি হত। একসঙ্গে ভোট দিতে আসতাম।’ এইসব কথা বলতে বলতে হাউহাউ করে কেঁদে ফেললেন অশোক ভট্টাচার্য।
তবে তিনি নিজেকে সামলেও নেন। তারপর নিজের স্মৃতি হাতড়ে বলেন, ‘টানা ৪১ বছর লড়াইয়ের সঙ্গী ছিল। তাই বেশ খারাপ লাগছে। এই ভোট এখনও পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবেই হচ্ছে। শিলিগুড়ির একটা আলাদা রাজনৈতিক সংস্কৃতি রয়েছে। আজও তা রক্ষা হোক তা আমরা চাই। যেন শান্তিপূর্ণভাবে যে যার পছন্দের দলকে ভোট দেন। এখানে যেন কলকাতার মতো না হয়। এই আবেদনই করেছিলাম আমরা। সেই আবেদনেই মানুষ সাড়া দিচ্ছেন।’
উল্লেখ্য, ১৯৯১ থেকে ২০১১ পর্যন্ত অশোক ভট্টাচার্য শিলিগুড়ির বিধায়ক ছিলেন। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রীও ছিলেন। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে হারার পরও ২০১৬ সালে শিলিগুড়ি থেকে জিতেছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে প্রবল তৃণমূল কংগ্রেসের হাওয়াতেও কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে অশোক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে পুরবোর্ড দখল করে বামফ্রন্ট। আর আজ তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানান, শিলিগুড়ি পুরসভার নির্বাচনে বামফ্রন্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাবে এবং তারাই বোড গঠন করবে।