রাজ্য জুড়ে কার্যত সবুজ সুনামি। খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে বিজেপি। বামেরা কিছুটা হলেও মাথা তোলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু পুরভোটের ফলাফলের নিরিখে সেটাও হিসাবের মধ্যে ফেলতে চাইছেন না অনেকেই। ভোটের ফলাফলের নিরিখে ১০৮টি পুরসভার মধ্য়ে ১০২টি পুরসভাতেই জয়ী তৃণমূল। শতাংশের হিসাবে ৯৪ শতাংশ পুরসভাই তৃণমূলের দখলে। দুটি পুরসভায় বিরোধীরা ক্ষমতায় আসছেন। চারটি পুরসভা ত্রিশঙ্কু অবস্থায় রয়েছে। অন্তত ৩০টি পুরসভায় বিরোধীদের নাম নিশানও নেই।
উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বীরভূম সর্বত্র ঘাসফুলের দাপট। মুর্শিদাবাদে ৬টি (মুর্শিদাবাদ, জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ, কান্দি, জঙ্গিপুর, ধুলিয়ান, বহরমপুর), নদিয়ায় ১০টি (নবদ্বীপ, শান্তিপুর, রানাঘাট, বীরনগর, কল্যাণী, গয়েশপুর, হরিণঘাটা, চাকদা, কৃষ্ণনগর), হাওড়ায় ১টি (উলুবেড়িয়া), হুগলিতে ১১টি (হুগলি-চুঁচুড়া, বাঁশবেড়িয়া, বৈদ্যবাটি, শ্রীরামপুর, ভদ্রেশ্বর, রিষড়া, কোন্নগর, আরামবাগ, উত্তরপাড়া-কোতরং, তারকেশ্বর, ডানকুনি) জয়ী তৃণমূল। বিধানসভা ভোটে দাগ কাটতে পারলেও পুরভোটে উত্তরবঙ্গেও ঘাসফুলের জয়জয়কার। শুভেন্দু অধিকারী কিংবা দিলীপ ঘোষের মতো বিজেপির দাপুটে নেতাদের গড়েও শেষ হাসি তৃণমূলের। কিন্তু কোন মন্ত্রে এমন পাহাড় প্রমাণ জয় পেল তৃণমূল?
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিধানসভা নির্বাচনের বিপুল জয়ের পরে বর্তমানে তৃণমূলের মনোবল থেকে সংগঠন সবটাই একেবারে তুঙ্গে। তুলনায় নির্বাচনের দিন ভোট মেশিনারিকে কাজে লাগানোর মতো ক্ষমতা এবার একেবারেই ছিল না বিজেপির। বিরোধীদের দুর্বলতার ফসলও ঘরে তুলেছে তৃণমূল। আর সংগঠিতভাবে ভোটকে নিজেদের বাক্সে ফেলার জন্য কার্যত সব কৌশলই প্রয়োগ করেছিল তৃণমূল। বিরোধীদের দাবি, সন্ত্রাসের পথে, ছাপ্পার পথে জয় পেয়েছে তৃণমূল। তবে বাসিন্দাদের একাংশের মতে, বহু ক্ষেত্রে উন্নয়নের ফসল ঘরে তুলতে পেরেছে তৃণমূল। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলার মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। যতই জিতব ততই যেন আমরা নম্র হই। জয়নগরের মতো এলাকায় যেখানে আমরা কোনওদিনই জিতিনি সেখানেও এবার জিতেছি। কোথাও কিছু হয়নি। উৎসবের মেজাজে ভোট হয়েছে। ফলাফল ঘোষণা হতেই জানিয়ে দিলেন মমতা।