একজন দুইবারের কাউন্সিলার তৃণমূল প্রার্থী। অন্যজন কংগ্রেসের প্রার্থী। দুজনের মধ্যে মামা–ভাগ্নের সম্পর্ক। দুজনেই এবার পুরভোটের লড়াইয়ে পরস্পরের মুখোমুখি। সব মিলিয়ে মামা–ভাগ্নের এই লড়াইয়ে সরগরম খড়গপুরের রাজনীতি।
খড়গপুর পুরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের হয়ে দাঁড়িয়েছেন তৈমুর আলি খান। তৈমুর ওই ওয়ার্ডের দুবারের কাউন্সিলার। এদিন দলীয় সমর্থকদের সঙ্গে বাড়ি বাড়ি প্রচার করেন তৈমুর। প্রচারে বেরিয়ে তৈমুর জানান, ‘এবারেও আমরা বিপুল ভোটে জিতব। এখানে একতরফাভাবেই ভোট হবে।’ নিজের ভাগ্নে কংগ্রেস প্রার্থী খুরশেদ আলি খান প্রার্থী হয়েছেন শুনে তৈমুর জানান, ‘যে কোনও মানুষ নামতেই পারে। ওর সখ হয়েছে, তাই রাজনৈতিক লড়াইয়ে নেমেছে। তবে ও কোন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নয়। মানুষ ওকে চেনে না, জানে না। কিছু কিছু মানুষ ওকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এই ব্যাপারে আমার ওর সঙ্গে কোনও কথা হয়নি। ও রাজনৈতিক ময়দানে নেমেছে। আমি কোনও বাধা দিইনি।’
এদিকে ব্যক্তিগত সম্পর্ক যাই থাক না কেন নিজের মামার বিরুদ্ধে প্রচারের ময়দানে ঝড় তুলছেন ওই ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী খুরশেদ আলি খান। এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস প্রার্থী জানান, ‘এই ওয়ার্ডে আমরা জিতছি। এই ওয়ার্ডে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা থেকে শুরু করে আমফানের টাকা দেওয়া পর্যন্ত দুর্নীতি হয়েছে। আমার মামার বিরুদ্ধে নয়। প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াই করছি। এই ওয়ার্ডে স্বামী–স্ত্রী দুজনে ১৫ বছর ধরে কাউন্সিলার ছিলেন। যাদের দোতলা বাড়ি রয়েছে, তাঁরা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা পেয়েছেন। অথচ যারা ত্রিপল খাটিয়ে রয়েছেন, তাঁরা কোনও টাকাই পায়নি। উনি মনে হয় পনেরো বছর কোনও রাস্তায় যাতায়াত করেনি। কোথায় কী সমস্যা আছে সে ব্যাপারেও জানা নেই। রাস্তাঘাট সবেতেই ব্যাপক দুর্নীতি। কোনও কিছুতে বাদ নেই। মানুষ পরিবর্তন চাইছে, মানুষ আমাকে জেতাবে।’ তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিন্তু তৃণমূল প্রার্থীকে ফের জেতানোর ব্যাপারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এলাকার বাসিন্দা আলেদা বিবির মতে, এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। নিকাশির ব্যবস্থা নেই। তাই এবার পরিবর্তন চাই। কিন্তু অন্যদিকে এলাকারই আরেক বাসিন্দা কালাম আহমেদের মতে, ভাইপো আসুক আর ভাগ্নে। আমরা তো তাঁকে চিনি না। সেবামূলক কাজ করতেও দেখিনি। আগামীদিনে যেই আসুক না কেন, সে যেন আমাদের সুখ সুবিধা দেখেন।