পুরভোটে প্রার্থী তালিকা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরের বিদ্রোহ চরমে উঠেছে। বহু নেতা-নেত্রী টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁরা মনোনয়নপত্রও জমা দিয়েছেন। বিশেষ করে হুগলি জেলার ১২ টি পুরসভার মধ্যে বহু পুরসভায় বেশকিছু ওয়ার্ডে তৃণমূল থেকে টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন অনেকেই। আগামী কাল শনিবার হুগলিতে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। বেশকিছু প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করলেও অধিকাংশ প্রার্থীই এখনও নির্দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। আর সেই বিষয়টি এখন মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূলের।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হুগলিতে অনেক প্রভাবশালী নেতা রয়েছেন যারা তৃণমূল থেকে টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়েছেন। ফলে ভোটে লড়াই করাটা তৃণমূলের পক্ষে বেশ কঠিন হতে পারে। কারণ এই সমস্ত প্রভাবশালী নেতাদের নিজেদের বহু ভোট রয়েছে। যা তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্ককে প্রভাবিত করতে পারে। হুগলির আরামবাগ পুরসভার ১৯ টি ওয়ার্ডের মধ্যে চারটি ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতারা। যারমধ্যে একটি মনোনয়ন খতিয়ে দেখার পর ভুলভ্রান্তি থাকার কারণে বাদ দিয়েছে জেলা শাসকের দফতর।
অন্যদিকে আবদুর রহিম নামে আরও এক বিক্ষুব্ধ নেতা নির্দল প্রার্থী থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। উত্তরপাড়া-কোতরঙে ১৩ জন বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন। দলের কর্মীদের অভিযোগ নেশাগ্রস্ত, দুর্নীতিগ্রস্ত এবং যারা অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদেরকেই প্রার্থী করা হয়েছে। সেই কারণে বিক্ষুব্ধ নেতারা নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন। হুগলির চাঁপদানি পুরসভাতেও অনেক বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন। যারমধ্যে ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোটে দাঁড়িয়েছেন মুহাম্মদ জাকির হোসেন।
এর আগে তিনি পুরপ্রশাসক মন্ডলীর সদস্য ছিলেন। তাঁর পরিবর্তে তৃণমূল যাকে প্রার্থী করেছে তাতে একেবারে সন্তুষ্ট নন তিনি। তাঁর বক্তব্য, 'এই লড়াইটা দলের বিরুদ্ধে নয়, ব্যক্তির বিরুদ্ধে।' আরও বেশকিছু ওয়ার্ডে এভাবে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতারা নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন। দল থেকে তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ করা হলেও অধিকাংশেরই বক্তব্য, তাঁরা কোনওভাবেই মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন না।