পঞ্চায়েত ভোটে ‘দাদাগিরিই’ হিতে বিপরীত হয়েছিল। পরের বছর লোকসভা নির্বাচনে বড়সড় ধাক্কা খেতে খেয়েছিল। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে পুরভোটে পুলিশকে ‘ফ্রি হ্যান্ড’ দেওয়ার আর্জি জানালেন রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য। প্রয়োজনে বিধানসভা ভোটের সময় যত সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল, তার দ্বিগুণ বাহিনী মোতায়েনের আর্জি জানালেন তিনি।
বৃহস্পতিবার ফেসবুকে দেবাংশুর অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্টে লেখা হয়, 'ব্যক্তিগত স্বার্থে কিছু মানুষ ভোটে অশান্তি করেন। তাই লোকাল বডির ভোটগুলোতে অশান্তি বেশি হয়। পুলিশকে ১০০ শতাংশ ফ্রি হ্যান্ড দিতে হবে। প্রয়োজনে বিধানসভার দ্বিগুণ সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হোক...আরেকবার ২০১৮ হলে আরেকটা ২০১৯ কিন্তু সময়ের অপেক্ষা.. বারবার সবটা ২০২১-এর মতো হবে না। আর হাতজোড় করে বাড়ি বাড়ি ঘুরলেও কিন্তু মানুষ ক্ষমা করবেন না। যাঁরা অশান্তি করেন, ভবিষ্যতে তাঁরা অনায়াসে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সেটিং করে নিতে পারবেন। তখন মার খেতে হবে কর্মীদের.. মরতে হবে সাধারণ সদস্যদের। কিছু স্বার্থান্বেষী বদমায়েশের জন্য দলের মুখে কালি লাগতে দেবেন না, একজন অতি সাধারণ কর্মী হিসেবে অনুরোধ রইল।'
দেবাংশুর পোস্টে যে সালগুলির উল্লেখ করা হয়েছে, তার প্রতিটিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে লাগামছাড়া সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছিল। ৩৪ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছিল তৃণমূল। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের সন্ত্রাস নিয়ে তো জাতীয় স্তরেও মুখে পড়েছে শাসকদলের। সেই পরিস্থিতিতে পরের বছরই লোকসভা বড়সড় ধাক্কা খেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা। একধাক্কায় তৃণমূলের আসন সংখ্যা কমে গিয়েছিল। সেইসময় যেমন নরেন্দ্র মোদী ম্যাজিক কাজ করেছিল, তেমনই ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের ‘দাদাগিরি’-র জন্য আমজনতার মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছিল। তার প্রভাব পড়েছিল ভোটব্যাঙ্কে। যদি ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে নিজেদের হারানো জমি ফিরে পায় তৃণমূল। তারপরও পুরভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে জোরজুলুম, হুমকি, সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে। পুরোপুরি পুনরাবৃত্তি না হলেও কয়েকটি জায়গায় পঞ্চায়েত ভোটের ঝলক পাওয়া গিয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে আগেভাগেই দলকে সতর্ক করে দিলেন দেবাংশু।