আগামী ৮ জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে। এবার গ্রামবাংলায় ভাল ফল করতেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে সিপিএম। তৃণমূল কংগ্রেস বেশিরভাগ আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। সেখানে বিজেপি সব জায়গায় প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সেই ছবি দেখা গিয়েছে জঙ্গলমহলেও। তাই এখানে বিজেপিকে পিছনে ফেলে সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে টক্কর দিতে নেতাইয়ের গণহত্যার অভিযোগে জেল খেটে জামিন থাকা অনুজ পাণ্ডে, ডালিম পাণ্ডেদের উপরেই ভরসা রাখল সিপিএম নেতৃত্ব। সঙ্গে আছেন আরও তিন পুরনো কমরেড— চণ্ডী করণ, শেখ খলিলুদ্দিন এবং তপন দে। এঁদের কাঁধেই এখন দায়িত্ব বর্তেছে লালগড় ব্লকের পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত দখলের।
বিজেপিও জঙ্গলমহলে প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে। তবে এখানে দিলীপ ঘোষের বুথেই প্রার্থী দিতে পারেনি বিজেপি। তাই প্রশ্ন উঠছে, কাকে ভোট দেবেন দিলীপ ঘো্য? তিনি আবার মেদিনীপুরের সাংসদ। তৃণমূল কংগ্রেস এখানে জমিয়ে প্রার্থী দিয়েছে। ২০১১ সালে লালগড়ের নেতাই গ্রামে গ্রামবাসীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল সিপিএমের বিরুদ্ধে। এখানে ৯ জন গ্রামবাসী মারাও গিয়েছিলেন। তারপর গ্রেফতার হন অনুজ পাণ্ডেরা। ২০২২ সালে জামিন পান সিপিএম নেত্রী ফুল্লরা মণ্ডল। জামিন পান অনুজ পাণ্ডেরাও। এখন তাঁদেরকেই এখানের জমি পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব দিয়েছে সিপিএম।
এদিকে এই নেতারা পঞ্চায়েত নির্বাচনের দায়িত্ব পাওয়ায় আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা। আবার বোমা–গুলির শব্দ শুনতে হবে না তো! এই আতঙ্কে ভুগছেন তাঁরা। যদিও অনুজ পাণ্ডে ও ডালিম পাণ্ডেরা প্রকাশ্যে প্রচারে যাচ্ছেন না। দলীয় কার্যালয়ে বসে নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজি সাজাচ্ছেন। সেখানে বিজেপিকে পিছনে ফেলে সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেই লড়াই করতে চাইছেন তাঁরা। লালগড় ব্লকের বৈতা এবং ধরমপুর পঞ্চায়েত নির্বাচনের দায়িত্বে আছেন অনুজ ও ডালিম। বাকিগুলিতে অন্যরা রয়েছেন। এই বিষয়ে ঝাড়গ্রাম সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপকুমার সরকার সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘ওই পাঁচ নেতা জনপ্রিয়ই রয়েছেন। তাই তাঁরা দলকে সাহায্য করছেন।’
আরও পড়ুন: অস্থায়ী উপাচার্যদের বৈঠকে ডাকলেন রাজ্যপাল, আরও কঠোর পদক্ষেপ কি করবেন?
আর কী জানা যাচ্ছে? লালগড় পঞ্চায়েত সমিতির ৩০টি আসন। তার মধ্যে বামজোট ২৬টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। সিপিএমের প্রতীকে ২২ জন এবং চারজন নির্দল প্রার্থী। তবে অনুজ–ডালিমদের নিয়ে চিন্তিত নয় তৃণমূল কংগ্রেস। তাই ঝাড়গ্রামের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি দুলাল মুর্মু বলেন, ‘গণহত্যার নায়কদের এলাকাবাসী প্রত্যাখ্যান করেছেন। এবারও তাই করবেন।’ কিন্তু অনুজ–চণ্ডী পাণ্ডের কথায়, ‘আমরা দলকে ভালবাসি। তাই প্রার্থী–কর্মীদের পরামর্শ দিচ্ছি।’