আগামী ৮ জুলাই রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে চলছিল মনোনয়ন পর্ব। যার শেষ দিন ছিল আজ, বৃহস্পতিবার। কিন্তু এই পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন জমা করার শেষদিনেই রণক্ষেত্রের চেহারা নিল চোপড়া থেকে ভাঙড়। বিরোধীরা এই সব ঘটনার দায় শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের উপর চাপাচ্ছে। কারণ এই দুটি এলাকায় গুলি চালানোর জেরে দু’জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দুটি এলাকায়। সেখানে রক্ত ঝরার পাশাপাশি মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। উত্তরবঙ্গের চোপড়ায় এবং দক্ষিণবঙ্গের ভাঙড়ে আজ গুলি চলার ঘটনায় মারা গিয়েছেন দু’জন। তবে এই দুই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও যোগ নেই বলে আজ জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাহলে কারা দায়ী হিংসার ঘটনায়? রাজ্যের এই দুটি ঘটনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাঠগড়ায় তুলেছেন বামেদের পাশাপাশি বিরোধীদের। এই দুটি ঘটনার পিছনে যে কেন্দ্রের শাসকদলের উস্কানি রয়েছে সেটাও জানিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, কেন্দ্রের শাসকদলের ইন্ধনেই এই দুটি জায়গায় হিংসা এবং অশান্তি ঘটনা ঘটেছে। অন্যত্র মনোনয়ন শান্তিপূর্ণভাবেই হয়েছে। এমনকী যারা এসব কাজ করেছে, তাদের দল প্রার্থী হতে দেয়নি। কারণ, তাদের এইসব কাজে অসন্তুষ্ট তৃণমূল কংগ্রেস বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? এদিন চোপড়ায় বাম–কংগ্রেস মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছিল। তখন গুলি চালানো হয়। তাতে একজন রাজনৈতিক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। আবার ভাঙড়ে মনোনয়ন পর্বের শেষ লগ্নে গুলি–বোমা চলে। তাতে একজন আইএসএফ কর্মী মারা গিয়েছেন। এই দুটি ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চোপড়ার ঘটনায় তৃণমূল যুক্ত নয়। ভাঙড়ে উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকেও গতকাল প্রতিরোধ করা হয়েছে। বাম আমলে কাউকে মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হতো না। প্রশাসনকে বলেছি কড়া পদক্ষেপ করতে হবে।’
আর কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? মুখ্যমন্ত্রী আজ ডায়মন্ডহারবারে এসেছেন। এখানে কিছু কাজ আছে। তারপর তিনি কাকদ্বীপে চলে যাবেন। সেখানে তৃণমূলে নব জোয়ার কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। অর্থাৎ একমঞ্চে আবার আসবেন মমতা–অভিষেক। তারপর সেখান থেকে ফিরে কালীঘাটের বাড়িতে নির্বাচনী কমিটির সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন। সুতরাং পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে তাঁর সভা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। আজ এখানে এসে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘এখন অনেকেই মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন। বাম আমলে তো কাউকে মনোনয়ন জমা দিতেই দেওয়া হতো না। একতরফা আমাদের ওপর হামলা হয়েছে। কে উস্কানি দিচ্ছে সব জানি। চোপড়ার ঘটনায় তৃণমূল জড়িত নয়। ভাঙড়েও অনেক উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের ভুল বোঝানো হচ্ছে। তারপরেও প্রশাসনকে বলেছি কড়া পদক্ষেপ করতে হবে। বাংলাকে বদনাম করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আইএসএফ প্ররোচনা দেওয়ায় ভাঙড়ে অশান্তি হয়েছে।’