রাজ্যের সর্বত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। তবে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই আজ শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে। তবে সেখানেও ধাক্কা খেল রাজ্য। হাই কোর্টের রায়কে বহাল রেখে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল যে রাজ্য জুড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেই ভোট অনুষ্ঠিত হবে। বিচারপতি বিভি নাগরত্না এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ভোটে কোনও ধরনের অশান্তি কাম্য নয়। অতীতে বাংলায় ভোটের সময় হিংসা দেখা গিয়েছে। এই অবস্থায় হাই কোর্ট পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েছিল। সেই রায়তে কোনও সমস্যা নেই।
বাহিনী মোতায়েন নিয়ে মামলার শুনানি চলাকালীন আজ বিচারপতি নাগরত্না আজ রাজ্য কমিশনকে বলেন, 'এমনিতে আপনারা পঞ্চায়েত ভোটের জন্য পাঁচ রাজ্যের থেকে পুলিশ চেয়েছেন। এদিকে হাই কোর্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হলে তার খরচ কেন্দ্রীয় সরকার বহন করবে। তাহলে আপনাদের সমস্যা কোথায়?' এদিকে বিচারপতির প্রশ্নের জবাবে কমিশনের আইনজীবী দাবি করেন, রাজ্যের পুলিশ যথেষ্ঠ দক্ষ। তবে সংখ্যায় পুলিশকর্মী কম থাকায় অন্য রাজ্য থেকে বাহিনী চাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, 'আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। এই আবহে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হলে পরিকল্পনা বদল করতে হবে।' এদিকে রাজ্য কমিশনের আইনজীবী আজ শীর্ষ আদালতে দাবি করেন, 'মনোনয়ন পর্বে কমিশন পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। মনোনয়ন কেন্দ্রের ১ কিমি পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল।'
এদিকে কমিশনের আইনজীবী আজ আদালতে যুক্তি দেন, 'নিরাপত্তার বিষয়টি রাজ্য দেখে। তবে এই ক্ষেত্রে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।' এই আবহে বিচারপতি নাগরত্না পালটা প্রশ্ন করেন, 'নিরাপত্তার দায়িত্ব যখন আপনাদের নয় তাহলে বাহিনী নিয়ে আপত্তি কীসের? বাহিনী যেখান থেকেই আসুক, আপনারা আপনাদের কাজ করুন। এই পরিস্থিতিতে হাই কোর্ট অবস্থা বুঝে নির্দেশ দিয়েছে। তাতে কোনও সমস্যা আমার চোখে পড়ছে না।' উল্লেখ্য, এর আগে হাই কোর্টের তরফে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে রাজ্যের সর্বত্র জওয়ানদের মোতায়েন করতে হবে। তবে সেই সময়সীমা পার করে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী চায়নি কমিশন। সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল তারা। তবে এবার সুপ্রিম কোর্টও বাহিনীর পক্ষেই সওয়াল করল।