হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত ভোটে নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়ালে তাঁর আর ঠাঁই হবে না দলে। কিন্তু ঠাকুরগরের ডুমা গ্রাম পঞ্চায়েতে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূলের বুথ সভাপতি। কেন এই সিদ্ধান্ত তাঁর কারণ জানালেন গাইঘাটা বিডিও অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে আসা ওই তৃণমূল নেতা বিদ্যুৎ মণ্ডল (যদিও তিনি নিজে 'ছিলাম' বলছেন)।
মনোনয়ন জমা শুরু সকাল ১১টা থেকে। অনেক আগে থেকে ভিড় জমেছে বিডিও অফিসে। ভিড়ে বেশির ভাগই শাসকদলের হয়ে মনোনয়ন জমা দিতে আসা প্রার্থী। তারই মধ্যে এক জায়গায় জনা ষাটেক গ্রামবাসীকে নিয়ে দাঁড়িয়ে নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোয়নয়ন জমা দিতে আসা বিদ্যুৎ মণ্ডল। সেই গ্রামবাসীদের মধ্যে বেশির ভাগ মহিলা।
কেন নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়াবার সিদ্ধান্ত নিলেন? এই প্রশ্নের উত্তরে বিদ্যুৎ জানালেন, গ্রামবাসীদের দাবিতে এই সিদ্ধান্ত। তাঁর কথায়,'দল থেকে যাঁকে প্রার্থী করা হয়েছিল তাঁকে পছন্দ নয় গ্রামবাসীদের। কোনও আলোচনা না করেই প্রার্থী করা হয়েছিল। তাই গ্রাসবাসীরা আমাকে প্রার্থী হতে বললেন। আমি ওঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ওরা রাজি হয়নি। তাই গ্রামবাসীদের দাবি মেনে আমি নির্দল প্রার্থী হয়েছি।'
তার সঙ্গে মনোনয়ন জমা দিতে আসা গ্রামবাসীরদেরও একই বক্তব্য। তাঁদের কথায়, 'আমরা গ্রামবাসীরাই নির্দল প্রার্থী দিয়েছি। জেতার ব্যাপারে আমরা একশ শতাংশ আশাবাদী।'

নির্দল প্রার্থীর সঙ্গে মনোনয়ন জমা দিতে এসেছেন গ্রামবাসীরা।
এই নিয়ে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা বললেন, ‘কেউ র্নিদল হিসাবে মনোনয়ন জমা দিতেই পারেন। আমরা কাউকে বাধা দিতে যাব না। আমাদের এখানে মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে কোনও অশান্তি হয় না। কিন্তু দলের নির্দেশ না মানলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে দল।’
তবে তা নিয়ে চিন্তিত নন বিদ্যুৎ। তাঁর কথায়,'দল আমার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবে তা নিয়ে ভাবি না। গ্রামবাসীরাই আমাকে নির্দল হিসাবে দাঁড় করিয়েছেন। সেই সিদ্ধান্তই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।'
তাঁর ‘নবজোয়ার’ যাত্রায় একাধিকবার অভিষেক জানিয়েছেন, দল থেকে নির্দল প্রার্থী হয়ে যাওয়ার জন্য যদি তাঁকে দু-একটা গ্রাম পঞ্চায়েত হারাতে হয়, তা তিনি হারাতে রাজি, কিন্তু দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তিনি নির্দলদের দলে আর ফেরত নেবেন না। এর পাশাপাশি তিনি জানিয়েছিলেন, প্রার্থী বাছার ক্ষেত্রে গ্রামবাসীদের পছন্দকেই অগ্রাধিকার দেবেন।
কিন্তু ডুমা বলছে অন্য কথা। তৃণমূল যে প্রার্থীকে দাঁড় করিয়েছে তা পছন্দ নয় তাঁদের। তাই বাধ্য হয়েই নির্দল প্রার্থীকে দাঁড় করিয়েছেন গ্রামবাসীদের একাংশ।