পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলের বিদায়ী উপপ্রধানকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসেবেই পঞ্চায়েত ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন ওই তৃণমূল নেত্রী।শেষমেষ জিতেও গেলেন। এবার পঞ্চায়েত ভোটে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়েছিলেন কাঁথির মারিশদা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী উপপ্রধান ঝুনুরানি মণ্ডল। শুধু তাই নয়, ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এবার তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছে। সেখানে জয়ী হয়েছে বিজেপি।
আরও পড়ুন: 'দল আগে তো কিছু জানায়নি', অভিষেকের নির্দেশে পদত্যাগ করে আপেক্ষ প্রধানের
পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলায় জেলায় নবজোয়ার কর্মসূচি করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতেও তিনি নবজোয়ার কর্মসূচি করেছিলেন। সেই কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে আচমকা মারিশদায় অভিষেকের কনভয় দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। গ্রামে ঢোকার পরে তিনি।এলাকার মানুষের কাছে অভিযোগ পান প্রধান, উপপ্রধান এবং অঞ্চল সভাপতি দুর্নীতিগ্রস্ত। এরপরে তিনি ঝুনুরানি, প্রধান রাম মণ্ডল, এবং অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি গৌতম মিশ্রকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই মতো তাঁরা ইস্তফা দিয়েছিলেন। ফলে দল থেকেও টিকিট দেওয়া হয়নি ঝুনুরানি এবং গৌতমকে। তাই তাঁরা দুজনেই নির্দল প্রার্থী হিসেবে ভোট লড়েন। ঝুনুরানির কাছে পরাজিত হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী রাজলক্ষ্মী মণ্ডল। তিনি ৬২ ভোটে ঝুনুরানির কাছে হেরেছেন। অন্যদি,কে নির্দল প্রার্থী হিসেবে পঞ্চায়েত সমিতিতে দাঁড়িয়েছিলেন গৌতম। তিনি অবশ্য বিজেপি প্রার্থীর কাছে ২৩০ ভোটে হেরে গিয়েছেন। তবে ৪০ বছর পর এই প্রথম কংগ্রেস বা তৃণমূলের বাইরে কোনও দল এই পঞ্চায়েত দখল করল।
উল্লেখ্য, এই গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট আসনের সংখ্যা রয়েছে ১৭টি। তার মধ্যে বিজেপি ৯ টিতে জিতেছে। একটিতে জয়ী হয়েছে নির্দল প্রার্থী। তৃণমূল জিতেছে ৬টি আসনে আর একটি জিতেছেন ঝুনুরানি। পঞ্চায়েত সমিতিতে ৩ টি আসনের মধ্যে বিজেপি দুটিতে জিতেছে। ৭ টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৩টিতে জিতেছে বিজেপি। অর্থাৎ কাঁথি ২ নম্বর ব্লকে এবার ভালো ফল করেছে পদ্ম শিবির।
এ নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডল বলেন, ‘মারিশদার মানুষ কখনও চোরদের সমর্থন করবেন না সে কথা তার আগেই জানিয়েছিলেন। তা তাঁরা করে দেখিয়েছেন।ভোটে তৃণমূলকে গ্রামবাসীরা তাড়িয়েছেন।’ যদিও কাঁথি সংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি তরুণ মাইতি বলেন, ‘গোটা রাজ্যে মানুষ তৃণমূলকে সমর্থন করেছে। তবে এখানে বিজেপি মানুষকে ভুল বুঝিয়েছে। ওই অঞ্চল কেন হাতছাড়া হয়েছে তা আমরা পর্যালোচনা করে দেখব।’ অন্যদিকে, ঝুনুরানি তৃণমূলে যোগ দেবেন নাকি বিজেপিতে যোগ দেবেন সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে গৌতম জানিয়েছেন, তিনি তৃণমূলেরই একনিষ্ঠ কর্মী। তিনি দলের সঙ্গেই রয়েছেন।