মাটি কামড়ে পড়ে থেকে বাঁকুড়ার জেলা পরিষদ আসনে জয় পেলেন তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল। জেলা পরিষদের ৪৪ নম্বর আসনে জিতে গিয়েছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁর প্রাক্তন স্ত্রী। জেলার জয়পুর ব্লক গ্রাম পঞ্চায়েতে ও পঞ্চায়েত সমিতির আসনে শাসকদলের বিপক্ষে কোনও প্রার্থী না থাকায় শুরুতেই জেলা পরিষদের গণনা শুরু হয়। গণনায় প্রায় ১৮ হাজার ভোটে জিতেছেন সুজাতা।
এর আগেরও ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে আরামবাগ কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করে তৃণমূল। কিন্তু সেবার তিনি জিততে পারেননি। ভোটগ্রহণের দিন কেন্দ্রে গিয়ে বিজেপি কর্মীদের তাড়া খেতে হয়। এ বার ফেল পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী করে তৃণমূল। বিরোধীদের হারিয়ে তিনি জয়ী হয়েছেন।
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব বলছে জেতা জন্য তিনি ক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার কথায় তাঁকে দেখে মনে হচ্ছিল যে তিনি বিধানসভা বা লোকসভা ভোটের জন্য লড়াই করছেন। মাটি কামড়ে পড়ে থাকাতেই তাঁর এই জয় এসেছে।
সুজাতা নিজেও অবশ্য স্বীকার করেছেন এই জয় সহজ ছিল না। তাঁর কথায়,'আমি যে জায়গায় দাঁড়িয়েছিলাম সেটা পিছিয়ে পড়া অঞ্চল। এক মাস ধরে আমরা খেটেছি। বুথকর্মী, অঞ্চলকর্মী সবাই আমরা মাটি কামড়ে পড়ে ছিলাম। যে জায়গা গুলোতে আমরা দূর্বল ছিলাম সেগুলো কভার করেছি। মানুষের দরজায় দরজায় গিয়ে প্রচার করেছি।'
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় প্রাক্তন স্বামী সৌমিত্রর সঙ্গে বিজেপিতেই ছিলেন।২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী হন সৌমিত্র। কিন্তু আদালতে নির্দেশে নিজের এলাকায় যেতে পারেননি তিনি। একা হাতে প্রচার সামলান সুজাতা। জয়ও পান সৌমিত্র খাঁ। কিছুদিন আগেই তাঁদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। কিন্তু ভোটে লড়াইয়ে যে শিক্ষা সে সময় হয়েছিল। তাঁকেই কাজে লাগিয়েছেন এবার। তাতেই এসেছে জয়।
এই জয়ের পর বাঁকুড়া তৃণমূলে চর্চা শুরু হয়েছে, এবার কী তবে লোকসভায় তাঁকে প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে দাঁড় করাবে দল? সুজাতাকে প্রার্থী করার পিছনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুচিন্তিত কৌশল রয়েছে বলেই মনে করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এক সময় জেলার পর্যবেক্ষক ছিলেন তিনি। এখনও বিভিন্ন বিষয় তিনি সরাসরি দেখেন। তাই যেহেতু বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যেই সুজাতার জেতা জেলা পরিষদ পড়ে, তাই তাঁকে আরও বড় লক্ষ্যে ওই আসনে প্রার্থী করা হয়েছে। তেমনটা মনে করছেন তৃণমূলের কেউ কেউ।