জলপাইগুড়িতে এক তৃণমূল প্রার্থীর টাকা বিলি সংক্রান্ত অভিযোগের মামলায় চাঞ্চল্যকর দাবি করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ওই প্রার্থী ভোট কেনার জন্য টাকা দেননি, ভিক্ষা হিসেবে টাকা দিচ্ছিলেন। জেলা শাসকের অনুসন্ধানে এমনই তথ্য জানা গিয়েছে বলে কলকাতা হাইকোর্টে জানিয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কৌঁসুলি কিশোর দত্ত। নির্বাচন কমিশনের এরকম বক্তব্য শুনে কার্যত হেসে ফেললেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন: 'স্ট্রং রুমে ৮০, বুথ পিছু ৪ জওয়ান রাখতেই হবে', কমিশনকে বললেন BSF-এর IG
বৃহস্পতিবার মামলাটি ওঠে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে। কলকাতা হাইকোর্টে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে মামলা করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই মামলায় একাধিক বিষয়ে অভিযোগ তোলা হয়। তাতে অভিযোগ হয়, ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ প্রকল্পের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী তা করা যায় না। শুধু তাই নয়, পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার কে অমরনাথ রাজনৈতিক মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ তোলেন। সেই মামলাতেই জলপাইগুড়ির ওই তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে টাকা বিলি করার অভিযোগ ওঠে। সেই সংক্রান্ত মামলায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কৌঁসুলি কিশোর দত্ত দাবি করেন, তিনি ভিক্ষা দিচ্ছিলেন। এরকম যুক্তি শুনে কার্যত হেসে ফেলেন প্রধান বিচারপতি। এর পরে তিনি কটাক্ষের সুরেই বলেন, ‘হতে পারে নিজের নাতনির জন্মদিন উপলক্ষে তিনি ভিক্ষা দিচ্ছিলেন।’ অন্যদিকে, শুভেন্দুর আইনজীবী সৌম্য মজুমদার দাবি করেন, ‘ওনার টাকার উৎস কী তা জানতে পারলেই প্রকৃত সত্য জানা যাবে।’
শুভেন্দুর আইনজীবীর অভিযোগ, এর ফলে সরাসরি ভোটারদের প্রভাবিত করা হচ্ছে। অন্যদিকে, অন্যান্য নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কৌঁসুলি কিশোর দত্ত বলেন, ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ প্রকল্পের বিজ্ঞপ্তি গত ১৫ জুন ওয়েবসাইট থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। অন্যদিকে, রাজনৈতিক মিছিলে পুলিশ সুপারের যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে কড়া পদক্ষেপ নিতে বলেছেন প্রধান বিচারপতি। প্রয়োজনে কেন ওই পুলিশ সুপারকে বদলি করা হচ্ছে না? তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি। পাশাপাশি শুভেন্দুর আইনজীবী দাবি করেন, ওই পুলিশ সুপারকে সরিয়ে জেলার দায়িত্ব দিতে হবে আইজি (বিএসএফ)–কে। তার ভিত্তিতে আদালত আইজি(বিএসএফ)–এর সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনে সেখানে অতিরিক্ত বাহিনী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়াও, ভোটে ওই জেলার নিরাপত্তা আরও বাড়াতে বলেছে আদালত।