দেড় দশক পর দিল্লি পুরনিগম হাতছাড়া হল বিজেপির। এই জয়ে আপ্লুত দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া। তাঁর কথায়, ‘এটা শুধু জয় নয়, এক বড় কর্তব্য।’ এদিকে দিল্লি বিজেপির প্রধান আদেশ গুপ্ত হার মানতে নারাজ। তাঁর কথায়, ‘দিল্লিতে ১৫ বছরে বিজেপি ভালো কাজ করেছে। আম আদমি পার্টি বলেছিল যে তারা ২৩০টি ওয়ার্ডে জিতবে আর আমরা ২০টিতে। কিন্তু দিল্লির মানুষ আম আদমি পার্টির পাশাপাশি আমাদেরকেও সমর্থন জানিয়েছে। ওঁরা ৪২ শতাংশ ভোট পেয়ে থাকলে আমরাও ৩৮ শতাংশ ভোট পেয়েছি। আপ এগিয়ে গিয়েছে হয়ত। তবে সময় বলবে দিল্লিতে মেয়র কোন দলের হবে।’
প্রসঙ্গত, ১৯৫৮ সালে গঠিত হয়েছিল দিল্লি পুরনিগম। একদশক আগে সেই পুরনিগম তিনভাগে খণ্ডিত হয়েছিল। তবে ২০২২ সালের ফের একবার জুড়ে যায় তিনটি পুরনিগম। ফের ২৫০ ওয়ার্ড বিশিষ্ট অবিভক্ত দিল্লি পুরনিগম গঠিত হয়। আজ সেই পুরনিগমের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিত হয়।
এদিন ভোটগণনার শুরু থেকেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চালায় বিজেপি এবং আম আদমি পার্টি। তবে বেলা যত গড়িয়েছে তত এগিয়েছে আম আদমি পার্টি। পিছিয়ে পড়ে বিজেপি। দিল্লিতে অন্তত ১৩০টি ওয়ার্ডে জয়ী হতে চলেছে আম আদমি পার্টি। এই আবহে মণীশ সিসোদিয়া বলেন, ‘দিল্লি পুরনিগমের দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের ওপর ভরসা রাখার জন্য দিল্লিবাসীদের ধন্যবাদ। বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত এবং নেতিবাচক দলকে হারানোর জন্য রাজধানীবাসী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে সাহায্য করেছে।’
দিল্লি পুরনিগমের বাৎসরিক বাজেটের পরিমাণ ১৫,২০০ কোটি টাকা। পুরনিগমের মোট কর্মী সংখ্যা প্রায় দেড় লক্ষ। এর আগে বিগত বেশ কয়েক দফায় বিধানসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টিকে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠা দিয়েছে দিল্লিবাসী। তবে পুরনিগম নির্বাচনের ক্ষেত্রে আম আদমি পার্টির ওপর একবারও ভরসা রাখেনি দিল্লিবাসী। লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও প্রতিবারই শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে আম আদমি পার্টিকে। তবে দিল্লির পাশাপাশি অন্যান্য রাজ্যেও নিজেদের প্রসার ঘটানোয় এবার দিল্লিতেও লোকসভা নির্বাচনে ভালো ফল করার দিকে তাকিয়ে থাকবে আম আদমি পার্টি। লোকসভা নির্বাচনের সেমিফাইনাল হিসেবেই এই পুরভোটকে দেখছিল দিল্লির রাজনৈতিক মহল। এমনিতেও পুরবোর্ডের একীকরণ নিয়ে দীর্ঘ জটিলতার পর এই নির্বাচন হল। তাছাড়া সাম্প্রতিককালে আপ-এর একাধিক হেভিওয়েট নেতা জড়িয়েছেন দুর্নীতির মামলায়। এই আবহে বিজেপিকে হারানো আপ-এর পক্ষে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।