হিমন্ত বিশ্বশর্মার হাত ধরে উত্তর-পূর্ব ভারতে যে গৈরিকীকরণ শুরু হয়েছিল, তা কি অব্যাহত থাকবে? উত্তর মিলবে বৃহস্পতিবার (২ মার্চ)। বুথফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী, বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নাগাল্যান্ডে ক্ষমতায় ধরে রাখতে চলেছে বিজেপি ও ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি (এনডিপিপি) জোট। ত্রিপুরাতেও সরকার গঠনের দৌড়ে এগিয়ে আছে বিজেপি। তবে মেঘালয়ের ভোট-আকাশ এখনও পরিষ্কার নয়। বুথফেরত সমীক্ষা থেকে যা ইঙ্গিত, তাতে ত্রিশঙ্কু হতে চলেছে মেঘালয়। যে রাজ্যের দিকে নজর থাকবে তৃণমূল কংগ্রেসের। যে দল পশ্চিমবঙ্গের সাগরদিঘির উপ-নির্বাচন জয়ের বিষয়ে কার্যত নিশ্চিত।
এমনিতে বুথফেরত সমীক্ষা (এক্সিট পোল) যে মিলে যাবে, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। অতীতে একাধিকবার এমনও হয়েছে যে বুথফেরত সমীক্ষা পুরোপুরি ওলট-পালট হয়ে গিয়েছে। তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, উত্তর-পূর্ব ভারতে আপাতত যা রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে কংগ্রেস বা অন্য কোনও বিরোধী দলের পক্ষে মাথাচাড়া দেওয়া কঠিন। একমাত্র বিজেপিকে কিছুটা পরীক্ষার মুখে পড়তে হতে পারে মেঘালয়ে।
বুথফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী, এবার মেঘালয়ে কোনও দল ম্যাজিক ফিগার পার করতে পারবে না। একক বৃহত্তম দল হতে পারে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (পিপিপি)। কনরাড সাংমার দল গতবার ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পার্টি (ইউডিপি), বিজেপি এবং অন্যান্য আঞ্চলিক দলের সঙ্গে জোট করে সরকার গঠন করেছিল। এবার ভোট-পূর্ববর্তী কোনও জোট হয়নি। তবে কনরাড ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন, আগেরবারের মতো বিজেপি এবং ইউডিপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গঠন করতে পারেন।
সেই পরিস্থিতিতে বুথফেরত সমীক্ষা মতো তৃণমূল যদি ১০ টি আসন পায়, তাহলেও ‘কিংমেকার’ হতে পারবে না বলে রাজনৈতিক মহলের মত। ওই মহলের মত, মূলত বাংলার মাটিতেই সীমাবদ্ধ কোনও দলের সঙ্গে জোট করতে চাইবে না মেঘালয়ের দল এনপিপি। আর প্রচার-পর্ব যতই আক্রমণাত্মক হোক না কেন, কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির সঙ্গে জোট গড়তে অগ্রাধিকার দেবে এনপিপি। তাই মেঘালয়ে যা আসন পাবে, সেটাই সান্ত্বনা পুরস্কার হবে তৃণমূলের কাছে। কারণ গতবারের বিধানসভা নির্বাচনে ১০০ শতাংশ আসনেই জামানত জব্দ হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের।
আরও পড়ুন: Election: তিন রাজ্যেই বিজেপির ভোটের হার বাড়বে, শেষ বেলায় ছক্কা হাঁকালেন ঋতুরাজ
২০১৮ সালের মেঘালয় বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল
গতবার বিধানসভা নির্বাচনে কোনও দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনও দল। একক বৃহত্তম দল হয়েছিল কংগ্রেস (২১ টি আসন)। এনপিপি ১৯ টি আসনে জিতেছিল। ছ'টি আসনে জিতেছিল ইউডিপি। বিজেপি দুটি আসনে জিতেছিল। হিল স্টেট পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি দুটি আসনে জয়লাভ করেছিল। নির্দলরা জিতেছিল তিনটি আসনে। অন্যান্যদের ঝুলিতে পাঁচটি আসন গিয়েছিল।এনসিপি একটি আসনে জিতেছিল।
২০১৮ সালের ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল
গত বছরের বিধানসভা নির্বাচনে ৩৫ টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। জোটসঙ্গী আইপিএফটি আটটি আসনে জয়লাভ করেছিল। বামেদের দখলে গিয়েছিল ১৭ টি আসন। কংগ্রেস একটিও আসন পায়নি। তৃণমূল কংগ্রেসের ঝুলিও শূন্য ছিল।
এবাবের বুথফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী, তিপ্রা মোথা যে ভোটে লড়ছে, তার সুবিধা পেয়েছে বিজেপি। ভাগ হয়ে গিয়েছে বিরোধী ভোট। বিশেষত জনজাতি এলাকায় দাপট দেখিয়েছে তিপ্রা মোথা। আবার তৃণমূল লড়াই করলেও বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় বিজেপি একচ্ছত্র দাপট বজায় রেখেছে বলে বুথফেরত সমীক্ষায় ইঙ্গিত মিলেছে। বুথফেরত সমীক্ষা অনুযায়ী, শুধুমাত্র সংখ্যালঘু এলাকায় বাম-কংগ্রেস জোটের দাপট দেখা গিয়েছে।
২০১৮ সালের নাগাল্যান্ড বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল
গতবার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ১২ টি আসনে জিতেছিল। ২৬ টি আসনে জিতেছিল নাগা পিপলস ফ্রন্ট (এনপিএফ)। একটি আসনে জিতেছিল জেডিইউ। ১৭ টি আসনে জিতেছিল ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি (এনডিপিপি)। নির্দলরা জিতেছিল একটি আসনে।
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)