সৌভদ্র চট্টোপাধ্যায়
গুজরাটে গ্রাউন্ড ওয়ার্কে কি কোথাও খামতি থেকে গিয়েছে কংগ্রেসের তরফে? ১৯৮৫ সালে যেখানে ১৪৯ আসন জয় করে কংগ্রেস রেকর্ড জনমত নিয়ে সরকার গড়েছিল সেখানে ২০২২ সালের পরিসংখ্যান বলছে সেঞ্চুরির অঙ্কও ছুঁতে পারেনি কংগ্রেস। এক সিনিয়র পার্টি নেতা বলছেন, ‘ভোটারদের মুখ বন্ধ করা হয়েছিল।’ আর সেই সূত্র ধরেই উঠে আসছে গুজরাটে ভোটারদের থেকে তৃণমূল স্তরে কতটা পিছিয়ে ছিল কংগ্রেস।
গুজরাটে ভোট ঘিরে কংগ্রেস কোন পরিস্থিতিতে ছিল?
দেখা গিয়েছে, গুজরাট জুড়ে প্রচারে এতটাই কংগ্রেস মৃদু কণ্ঠস্বর নিয়ে এগিয়েছে যে, বিজেপি বা আম আমি পার্টির তুলনায় তা খুব ম্রিয়মান ছিল। এক পার্টি কর্মী বলছেন, প্রচারের ফান্ড এতটাই কম ছিল যে প্রার্থীরা অনেকে নিজের পকেট থেকে খরচ করে প্রচার চালিয়েছেন।
গুজরাটে ২০২২ নির্বাচনের ফলাফল
গুজরাটে বিজেপি রেকর্ড গড়ে ১৫৬ টি আসন দখল করেছে। সেখানে কংগ্রেস হাফ সেঞ্চুরি তো দূরের কথা মাত্র ১৭ আসনে জয় পেয়েছে। বিজেপির সেরা পারফরম্যান্সের দিনে কংগ্রেস গুজরাটে সবচেয়ে খারাপ ফলাফলকে তুলে ধরেছে।
দুর্গে ধাক্কা বিজেপির
কংগ্রেসের দখলে ১৯৬৭ সাল থেকে ছিল বোরসাদ কেন্দ্রটি। সেই বোরসাদ দূর্গে ২০২২ সালে বিজেপি দিয়েছে ধাক্কা। এই কেন্দ্র হাতছাড়া হওয়ার পাশাপাশি গুজরাটের রাজনৈতিক বিন্যাসে আম আদমি পার্টির এন্ট্রি কংগ্রেসকে বিপদে ফেলে দেয়। ২০১৭ সালে যেখানে কংগ্রেসের ভোট শেয়ার ৪১.৪ ছিল সেখানে ২০২২ সালে তা দাঁড়িয়েছে ২৮ শতাংশ। বিজেপির ভোট শেয়ার ২০১৭ তে ছিল ৪৯.৫ শতাংশ তা ২০২২ সালে ৫২.৫ শতাংশ হয়েছে। গুজরাটের ভোটে নবাগত আপ ১২.৯ শতাংশ ভোট শেয়ার ধরে রেখেছে। আর আপের ভোট শেয়ার যে কংগ্রেসের দখল থেকেই গিয়েছে তা স্পষ্ট বলে মনে করছেন অনেকেই।
কংগ্রেসের হাতে কী কী হাতিয়ার ছিল?
ভোটের আগে গুজরাটে মোরবি ব্রিজে ভেঙে পড়ার ঘটনা, বিলকিস বানো ধর্ষণ কাণ্ডে দোষীদের ছেড়ে দেওয়ার মতো ঘটনা কংগ্রেসের প্রচার অভিযানে অস্ত্র হতে পারত। তা মনেও করছেন কংগ্রেসের অবজারভাররা। তবে তা সঠিকভাবে জায়গা করে নিতে পারেনি কংগ্রেসের প্রচারে।
মূল যুদ্ধ গুজরাটের কোন জায়গায় হয়েছে?
২০১৭ সালের ভোটের গতিবিধি লক্ষ্য রাখলে দেখা যাবে, গুজরাটে কংগ্রেসের থেকে বিজেপির দখলে যে সমস্ত আসন গিয়েছে, তা দক্ষিণ গুজরাটের ও সৌরাষ্ট্রর। ২০১৭ সালে এই এলাকায় কংগ্রেসের যে দাপট ছিল তা কমতে থাকাতেই এই ২০২২ সালের বিধানসভা ভোটে পিছিয়ে পড়ে কংগ্রেস।