গোধরা থেকে ৬০ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন বিজেপি প্রার্থী চন্দ্র সিং রাউলজি। বিলকিস বানোর ধর্ষণকারীদের মুক্তির পক্ষে যাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম চন্দ্র সিং রাউলজি। পরবর্তীতে বিলকিসের দোষীদের ‘সংস্কারি ব্রাহ্মণ’ বলেও সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন তিনি। ২০১৭ সালের অগস্ট মাসে কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে এসেছিলেন তিনি। ২০০৭ ও ২০১২ সালে তিনি কংগ্রেসের টিকিটেই জিতেছিলেন।
গোধরা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী চন্দ্র সিং রাউলজি ৬৩.৫১ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে। এদিকে এই কেন্দ্রে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন রশ্মিতাবেন দুষ্মন্ত সিং চৌহান। তাঁর ঝুলিতে গিয়েছে ২৩.৮ শতাংশ ভোট। এছাড়া আম আদমি পার্টির রাজেশভাই সোমভাই প্যাটেল তৃতীয় স্থানে রয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৭.৫৮ শতাংশ ভোট। এদিকে এই কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়েছিল এআইএমআইএম। ওয়েসির দলের প্রার্থী হাসান শাব্বির কাছাবার জমানত বাজেয়াপ্ত হতে চলেছে এই কেন্দ্রে।
এর আগে গোধরার বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী বিধায়ক সিকে রাউলজি বিলকিসের ধর্ষকদের প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘তারা কোনও অপরাধ করেছে কি না জানি না। কিন্তু অপরাধ করার কোনও উদ্দেশ্য নিশ্চয় ছিল। তারা ভালো মানুষ - ব্রাহ্মণ। এবং ব্রাহ্মণদের সংস্কার ভালো। তাদের কোণঠাসা করা এবং শাস্তি দেওয়া কারও খারাপ উদ্দেশ্য হতে পারে।’ প্রসঙ্গত, বিলকিস বানো গণধর্ষণে সাজাপ্রাপ্তরা স্বাধীনতা দিবসের দিন মুক্তি পেয়েছে। এই ঘটনায় নিন্দার ঝড় ওঠে দেশজুড়ে। গোধরা কাণ্ডের পর বিলকিস বানোর পরিবারের ৭ জন সদস্যকে হত্যা এবং গর্ভবতী বিলকিসকে গণধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল এই ১১ জন। এর জেরে যাবজ্জীবন সাজা হয় তাদের। তবে দেশের ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে গোধরা কারাগার থেকে এই ১১ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালের মার্চ মাসে দাহোদ জেলায় লিমখেড়া তালুকায় রাধিকাপুর গ্রামে একদল দুষ্কৃতী বিলকিস বানোর পরিবারের উপর হামলা চালিয়েছিল। গণধর্ষণ করা হয় বিলকিসকে৷ তাঁর পরিবারের ৭ জন সদস্যকে খুন করা হয়৷ পরিবারের অন্য ৬ জন সদস্য পালিয়ে যেতে পেরেছিলেন৷ পরে ২০০৪ সালে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। বিশেষ সিবিআই আদালত বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের গণহত্যার অভিযোগে ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি ১১ জন অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাবাসের আদেশ ঘোষণা করেছিল৷ তবে এই বছর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্য সরকার পঞ্চমহলের কালেক্টর সুজল মায়াত্রার নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দোষীদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখে। সর্বসম্মতিক্রমে কারাবাসের সময় হ্রাসের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় কমিটিতে। সেই কমিটির সদস্য ছিলেন চন্দ্র সিং রাউলজি।