আদালতের মৌখিক পর্যবেক্ষণ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হবে না, এটা বলা যায় না। সোমবার এই কথাই স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। সম্প্রতি মাদ্রাজ হাইকোর্টের একটি রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে যায় নির্বাচন কমিশন। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণ।
সম্প্রতি মাদ্রাজ হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশনকে ভর্ৎসনা করে পর্যবেক্ষণে জানায়, যেভাবে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে জনসভা করার অনুমতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন, তাতে কমিশনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা করা উচিত। আদালতের এই পর্যবেক্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিটি সংবাদমাধ্যমে খবরও প্রকাশিত হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী শীর্ষ আদালতের কাছে আবেদন জানান, আদালতের কোনও মৌখিক পর্যবেক্ষণকে সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট করতে দেওয়া উচিত নয়।
তবে নির্বাচন কমিশনের এই আর্জি খারিজ করে দিয়ে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, ‘আদালতের ভিতরে বিচারপতি কী বলছেন সেটা সংবাদমাধ্যম বলতে পারবে না, সেটা আমরা বলতে পারি না। আদালতের ভিতরে যে আলোচনা হয়, তা জনস্বার্থ নিয়েই।আদালতের ভিতরে যে আলোচনা হয়, সেটা বিচারপতি ও আইনজীবীর মধ্যে। সেই আলোচনাকে তুলে ধরা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’ একইসঙ্গে বিচারপতি জানান,‘আমরা হাইকোর্টের ক্ষমতাকে খর্ব করতে পারি না। হাইকোর্ট গণতন্ত্র রক্ষার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি স্তম্ভ।’ তা নিয়ে শীর্ষ আদালত পর্যবেক্ষণের, চারপাশে যা ঘটছে, সেই কথাই বিচারপতিদের মুখে উঠে আসে। হাইকোর্ট তার পর্যবেক্ষণে যে কথা নির্বাচন কমিশনকে বলেছে, তার অর্থ কমিশনকে ঠিকভাবে বুঝতে হবে। একইসঙ্গে শীর্ষ আদালত জানায়, একজন বিচারপতির কোনও মন্তব্য নিয়ে কোনও কৈফিয়েত চাওয়া কোনও বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে না।গণতান্ত্রিক কাঠামোয় নির্বাচন কমিশনের একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।তার একটি স্বাধীন সত্তা রয়েছে। তবে আদালত যখন কোনও রায় দেয়, তখন এটা ভেবে দেয় না যে ওটা নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হচ্ছে নাকি অন্য কাউকে। তবে সোমবার অবশ্য শীর্ষ আদালত এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কোনও রায় দেয়নি।