সার্বিকভাবে কর্ণাটকে দাঁড়াতে পারেনি বিজেপি। বিদায়ী শাসক দল যেখানে ৬৬ টি আসনে থেমে গিয়েছে, সেখানে ১৩৫ টি আসন ছিনিয়ে নিয়েছে কংগ্রেস। সেই দুর্দশার মধ্যেও বিজেপিকে দু'হাত উপুড় করে ভোট দিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি শহর তথা আইটি শহর (IT City) বেঙ্গালুরুতে। বেড়েছে আসন সংখ্যাও। ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে যেখানে ১১ টি আসন পেয়েছিল বিজেপি, সেখানে এবার গেরুয়া শিবিরের আসন সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭। তবে কংগ্রেসও খুব একটা পিছিয়ে নেই। ১৫ টি আসনে জিতেছে কংগ্রেস। অথচ এবার বিধানসভা ভোটের আগে বেঙ্গালুরুর আগে বিজেপির মাথাব্যথা কম ছিল না। সেইসব সমস্যা সামলেও যে ভারতের অন্যতম আইটি শহর যে গেরুয়া রঙেই রাঙা হয়েছে, তাতে আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি যথেষ্ট স্বস্তি পাবে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, চিকপেট, রাজাজিনগর, রাজারাজেশ্বরী নগর, সিভি রমন নগর, কেআর পুরা, মহালক্ষ্মী লে-আউট, মাল্লেশ্বরম, বাসবানাগুডি, বোম্মানাহাল্লি, পদ্মনাভনগর, বেঙ্গালুরু সাউথ, দশরাহাল্লি, মহাদেবপুরা, যশবন্তপুর, ইয়েলাহাঙ্কা এবং ডোড্ডাবল্লাপুরে জিতেছে বিজেপি। সেখানে কংগ্রেসের ঝুলিতে গিয়েছে চামচারপেট, গান্ধীনগর, শান্তিনগর, শিবাজিনগর, সরভাঙ্গানগর, হেব্বাল, পুলকেশিনহগর, বিটিএম লে-আউট, গোবিন্দরাজানগর, বিজয়নগর, আনেকাল, ব্যাতারায়ণপুরা, হোসাকোটে, দেবননাহাল্লি এবং নেলামানগালা। টানটান নাটকের পর জয়নগর আসনেও জিতেছে বিজেপি।
আরও পড়ুন: মেরুকরণের রাজনীতি আদৌ কি বিজেপির জন্য বুমেরাং হয়েছে কর্ণাটক ভোটে? পরিসংখ্যানে কোন ইঙ্গিত
অথচ বেঙ্গালুরুতে এবার বিজেপির সমস্যা নেহাত কম ছিল না। রাজনৈতিক মহলের মতে, অপরিকল্পিত কাজকর্মের জন্য একাধিক পুর পরিষেবায় তিতিবিরক্ত হয়ে আছেন বেঙ্গালুরুর মানুষ। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের ধারণা ছিল যে প্রতিষ্ঠান-বিরোধী হাওয়া বেঙ্গালুরুতে বিজেপি চাপে ফেলে দিতে পারে। কিন্তু সেইসব চ্যালেঞ্জ সামলেই কীভাবে বেঙ্গালুরুর ‘প্রেস্টিজ ফাইট’-এ বাজিমাত করল বিজেপি? নেপথ্যে কি নরেন্দ্র মোদীর ম্যাজিক? যিনি ‘আত্মনির্ভরতার’ ডাক দেন। জোর দিয়েছেন স্টার্ট-আপের উপর।
আরও পড়ুন: ২০২৪ লোকসভার আগে কর্ণাটক ভোট কি খেলা ঘোরানোর পিচ? কী বলছে নির্বাচনী গণিত, কী বলছে চেনা ট্রেন্ড!
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক চাম্বি পুরানিকের মতে, বেঙ্গালুরুতে যা ফল হয়েছে, তা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে গ্রামাঞ্চলের ভোটারদের তুলনায় শহরাঞ্চলের ভোটারদের মন জিততে বেশি সক্ষম হয়েছে বিজেপি। তিনি বলেন, ‘গ্রামাঞ্চলের মানুষ যেভাবে ভোট দেন, সেভাবে ভোট দেন না শহরাঞ্চলের মানুষ। শহরে প্রচুর উচ্চবিত্ত এবং শিক্ষিত মানুষ থাকেন। তাঁরা গেরুয়া শিবিরকে সমর্থন করেন। (তথাকথিত) উচ্চবর্ণের মানুষ এবং বিনিয়োগকারী হিসেবে যে বহিরাগতরা শহরে আসেন, তাঁরাও বিজেপির দিকে ঝুঁকে থাকেন। সম্ভবত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং মোদী ফ্যাক্টরের জন্য বিজেপির দিকে ঝুঁকে থাকেন তাঁরা।’
(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)