আমেঠি লোকসভা কেন্দ্রটি ঐতিহাসিকভাবে উত্তরপ্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি লোকসভা কেন্দ্র। জাতীয় কংগ্রেসের এক সময়কার শক্ত গড় হিসেবে পরিচিত আমেঠি লোকসভা কেন্দ্রে গত নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে স্মৃতি ইরানি জয়ী হয়েছিলেন। ১৯৬৭ সাল থেকে এই লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচন সংগঠিত হয়ে আসছে। ১৯৬৭ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিদ্যাধর বাজপেয়ী এই কেন্দ্রটি থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালেও তিনি আসনটি ধরে রাখেন। এবার সেই কেন্দ্রে বিজেপির টিকিটে লড়ছেন স্মৃতি। কংগ্রেসের টিকিটে রাহুল গান্ধী লড়ছেন না। কংগ্রেসের টিকিটে লড়ছেন কিশোরীলাল শর্মা।
১৯৭৭ সালে জনতার দলের রবীন্দ্রপ্রতাপ সিং এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন। সঞ্জয় গান্ধী ১৯৮০ সালে এই লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করার পর তিনি বিমান দুর্ঘটনায় মারা গেলে এই কেন্দ্রের উপনির্বাচন হয়েছিল। ১৯৮১ সালের উপনির্বাচনের রাজীব গান্ধী এই কেন্দ্রটি থেকে জয়ী হয়েছিলেন জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। ১৯৮১, ১৯৮৪, ১৯৮৯ এবং ১৯৯১ পরপর চারবার এই কেন্দ্রটি থেকে জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে রাজীব গান্ধী জয়ী হয়েছিল। জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সতীশ শর্মা ১৯৯১ সালের উপনির্বাচনে জয়লাভ করেছিলেন এবং ১৯৯৬-এর নির্বাচনেও তিনি এই কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯৮ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির পক্ষ থেকে সঞ্জয় সিং জাতীয় কংগ্রেসের সতী শর্মাকে চার শতাংশ ভোটে পরাজিত করেন। তবে ১৯৯৯-এর লোকসভা নির্বাচনে জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সোনিয়া গান্ধী এই কেন্দ্রটি থেকে ৬৭ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজেপি প্রার্থীকে পরাস্ত করে জয়ী হয়েছিলেন।
২০০৪ সালের সাধারন নির্বাচনের রাহুল গান্ধী ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএসপির চন্দ্রপ্রকাশ মিশ্রকে পরাজিত করেছিলেন। ২০০৯-এর লোকসভা নির্বাচনে রাহুল গান্ধী ৭১ শতাংশ ভোট পেয়ে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিএসপির আশিস শুক্লা ১৪.৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও গেরুয়া ঝড়ের মধ্যে এই কেন্দ্রটিতে রাহুল গান্ধীর তৃতীয় বারের জন্য সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে কংগ্রেসের ভোটের শেয়ার পঁচিশ শতাংশ কমে গিয়েছিল। অন্যদিকে ভারতীয় জনতা পার্টি ২৮ শতাংশ ভোটের শেয়ার বৃদ্ধি করে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিলেন। ৩৪ শতাংশ ভোট পেয়ে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রটি হাতছাড়া হয় জাতীয় কংগ্রেসের। স্মৃতি ইরানি ৪৯ শতাংশ ভোট পেয়ে এই কেন্দ্রটি থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে রাহুল গান্ধী ৪৩.৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন।