চতুর্থ দফার লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত সমাপ্ত হয়ে গিয়েছে। পঞ্চম দফার ভোট নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি প্রস্তুতি শুরু করেছে। আর এই আবহে মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন করতে কেন এত সময় লাগছে? অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে এই প্রশ্নের উত্তর চাইল সুপ্রিম কোর্ট। এমনকী এই বিষয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হল। আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালতে সবটা জানাতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বলা হয়েছে, আগামী দু’মাসের মধ্যে করতে হবে মানিকতলা বিধানসভার নির্বাচন।
মানিকতলা বিধানসভার নির্বাচন নিয়ে শুক্রবার শুনানি হয়। আর সেখানেই সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে পড়তে হয় নির্বাচন কমিশনকে। নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চকে জানায়, ৯ মে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তারা উপনির্বাচন করার ছাড়পত্র পেয়েছে। তাই আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনকে ন্যূনতম সময় দেওয়া হোক। এই কথা শুনেই ক্ষোভ উগরে দেন বিচারপতি সূর্য কান্ত। বিচারপতি তখন প্রশ্ন করেন, কেন নির্বাচন আয়োজন করা হচ্ছে না? জবাবে নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী জানান, ইভিএম বিতরণ থেকে শুরু করে একাধিক বিষয় ঠিক করতে ন্যূনতম সময় প্রয়োজন। আর সময় চান।
আরও পড়ুন: কলকাতার ভোটে যাচাই হবে কাউন্সিলরদের দক্ষতা, নজর রাখবেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম
নির্বাচন কমিশন সময় চাওয়ায় ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। তখন তাঁর পালটা প্রশ্ন, একমাত্র কেন্দ্রের উপনির্বাচন করতে কি গোটা কমিশনকে বৈঠকে বসতে হয়? আপনারা বলছেন দ্রুত নির্বাচন করতে চান। কিন্তু এটা তো বলছেন না যে অবিলম্বে নির্বাচন করতে চান? এসব কথা চলতে পারে না। আপনাদের শেষ সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। কবে নির্বাচন করবেন? সেটা দু’সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিয়ে জানান। সেটা না হলে ফল ভুগতে হবে। দু’মাসের মধ্যে এই বিধানসভার নির্বাচন করে ফেলতে হবে। মামলা যাঁরা করেছিলেন তাঁদের বক্তব্য, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে মানিকতলার নির্বাচন করতে পারলে ভাল হয়।
এই মামলার পরবর্তী তারিখ ৩ জুন ধার্য করে সুপ্রিম কোর্ট। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের কয়েকমাসের মধ্যেই মৃত্যু হয় মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের। ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী কোনও জনপ্রতিনিধির মৃত্যু বা ইস্তফার জেরে শূন্যতা তৈরি হলে ৬ মাসের মধ্যে সেখানে উপনির্বাচন করতে হয়। কিন্তু মানিকতলার ক্ষেত্রে সেটা করা যায়নি। বিজেপির জন্যই তা করা যায়নি। কারণ সাধন পাণ্ডের বিরুদ্ধে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন কল্যাণ চৌবে। তিনি নির্বাচন প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। তার জন্য সুপ্রিম কোর্টে ভর্ৎসিত হতে হয় পরাজিত বিজেপি প্রার্থীকে। বরাহনগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন হতে পারলে কেন মানিকতলার হবে না? উঠছে প্রশ্ন।