উত্তর প্রদেশের বারাণসী লোকসভা কেন্দ্রটি বর্তমানে নরেন্দ্র মোদীর সংসদীয় ক্ষেত্র হওয়ায় আলোচনা শিরোনামে। উত্তরপ্রদেশের আশিটি লোকসভার মধ্যে এটি অন্যতম একটি লোকসভা কেন্দ্র। মোট পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রের সমন্বয়ে এই কেন্দ্রটি গঠিত। রোহানিয়া, বারাণসী, উত্তর বারাণসী, দক্ষিণ বারাণসী ক্যান্ট এবং সেবাপুরী এই পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রের সমন্বয়ে এই লোকসভা কেন্দ্র গঠিত। ১৯৫২ সাল থেকেই বারাণসী লোকসভা কেন্দ্রটিতে নির্বাচন সংগঠিত হয়ে আসছে। ২০১৯ সালের লোকসভার হিসাব অনুযায়ী ১৮ লক্ষ ৫৪ হাজার ৫৪০ জন মানুষ এই কেন্দ্রের ভোটার। ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে ২০১৯ সালের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। তার আগে ২০১৪ সালেও তিনি জয়যুক্ত হয়েছিলেন।
১৯৫২ থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থীরা এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। ১৯৬৭ সালে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী)-এর পক্ষ থেকে সত্যনারায়ণ সিংহ এই কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালের ফের ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের রাজারাম শাস্ত্রী এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। ১৯৭৭ সালে কংগ্রেস বিরোধিতার আবহে জনতা দলের চন্দ্রশেখর এই কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। ১৯৮০ এবং ১৯৮৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে যথাক্রমে কমলা পতিত্রী এবং শ্যামলাল যাদব জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বারাণসী কেন্দ্রের সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৮৯ সালে জনতা দলের পক্ষ থেকে অনিল শাস্ত্রী এই কেন্দ্রে জয়ী হন জাতীয় কংগ্রেসকে হারিয়ে। তবে ১৯৯১-এর পরবর্তী সময়ে এই কেন্দ্রটিতে ভারতীয় জনতা পার্টি একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে। শংকর প্রসাদ ১৯৯৬ থেকে ৯৯ পর্যন্ত তিনটি লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হন। ২০০৪ সালে জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে রাজেশ কুমার মিশ্র ফের একবার জয়লাভ করলেও ২০০৯ সালের নির্বাচনে মুরলী মনোহর যোশী ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে এই কেন্দ্রে জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থীকে পরাজিত করেন। ২০১৪ এবং ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। ২০১৯ সালে ৬৩.৬২ শতাংশ ভোট পেয়ে নরেন্দ্র মোদী এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন।
সর্বশেষ বিধানসভা নির্বাচনে রোহানিয়া বিধানসভা কেন্দ্রটিতে আপনা দল (সোনেলাল)-এর পক্ষ থেকে সুনীল প্যাটেল বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়া উত্তর বারাণসী, দক্ষিণ বারাণসী, বারাণসী ক্যান্ট কেন্দ্রগুলিতে ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে যথাক্রমে রবীন্দ্র জয়সওয়াল, নীলকান্ত তেওয়ারি, সৌরভ শ্রীবাস্তব, নীলরতন সিংপ্যাটেল বিধায়ক নির্বাচিত হন। সর্বশেষ বিধানসভা নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টির ভোট শেয়ার কিছুটা বাড়লেও বারাণসী বিধানসভা কেন্দ্রে ভারতীয় জনতা পার্টি একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে।
এবার প্রধানমন্ত্রীর সামনে মূল লড়াই কংগ্রেসের অজয় রাই ও বিএসপি-র আতহার জামাল লারির থেকে রয়েছে। তবে বাস্তব হল যে মোদীর জয় নিয়ে কার্যত কোনও সংশয় নেই। তিনি অন্য কিছু কেন্দ্রের মতই এখানে এসে রোড শো করেছেন। ভোটারদের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি লিখেছেন। এর বেশি করেননি প্রচারে। তবে বিজেপির বড়-মেজো নেতারা পড়ে আছেন কাশীতে মোদীর ব্যবধান বৃদ্ধি করার জন্য। এবার তাদের চেষ্টা ৫ লাখের ওপর যেন মার্জিন থাকে। সপ্তম দফায় পয়লা জুন এখানে ভোট। ফলাফল জানা যাবে চার তারিখ।