ভাঙড়ের বিজেপি নেতা তথা যাদবপুরে দলের সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি অবনী কুমার মণ্ডল নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। তা ঘিরে জোর চর্চা শুরু হয়েছিল যাদবপুরের রাজনীতিতে। অবশেষে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিলেন সেই বিজেপি নেতা অবনী কুমার মণ্ডল। বৃহস্পতিবার আলিপুর জেলাশাসকের দফতরে গিয়ে নিজের মনোনয়ন তুলে নেন। এরফলে যাদবপুরে আবার স্বস্তি ফিরল বিজেপিতে।
আরও পড়ুন: যাদবপুরে হঠাৎ নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেন বিজেপি নেতা, নেপথ্যে কী কারণ?
মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর অবনী মণ্ডল জানান, তিনি কারও চাপে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। ব্যক্তিগত কারণে তিনি নির্দল প্রার্থী থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তিনি মনে করেছেন যে নির্দল প্রার্থী হিসেবে তিনি দাঁড়ালে বিজেপির ক্ষতি হবে। আর তিনি দলের ভালো চান। সেই কারণে তিনি মনোনয়ন তুলে নিয়েছেন। তিনি মনে প্রাণে বিজেপিকে ভালোবাসেন বলে জানান।
বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সুনীপ দাসের বক্তব্য, একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তবে সেই ভুল বোঝাবুঝি মিটে গিয়েছে। নিজের ভুল বুঝতে পেরেছেন অবনী কুমার। তিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন সদস্য। যদিও বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, দলের নির্দেশেই ‘ডামি’ প্রার্থী হয়েছিলেন অবনী। তবে তিনি জেলার সহ-সভাপতির দায়িত্বে থাকায় তাতে দলের নেতাদের একাংশই আপত্তি তোলেন।
প্রসঙ্গত, যাদবপুর কেন্দ্রটি হল রাজ্যের লোকসভা কেন্দ্রগুলির মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এই আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন সায়নী ঘোষ, বাম প্রার্থী হয়েছেন সৃজন ভট্টাচার্য আর বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। জানা যাচ্ছে, অবনী মণ্ডল ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের রঘুনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি একজন শিক্ষানুরাগী মানুষ হিসেবেই পরিচিত। ভাঙড়ের রাজনীতিতে বেশ ভালোই প্রভাব রয়েছে এই বিজেপি নেতার। এক সময় ১৯৯৩ সালে ভাঙড় ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি হয়েছিলেন তিনি। পরে বিজেপির ২ নম্বর মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন, জেলা কমিটির সম্পাদকের দায়িত্বও সামলেছেন। আর বর্তমানে তিনি বিজেপির যাদবপুর সংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বিজেপি নেতা বিধানসভা ভোটে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন। ২০১৬ সালের ভাঙড় বিধানসভা থেকে তিনি ভোটে লড়েছিলেন। ফলে এই অবস্থায় হঠাৎ করে বিজেপির নেতা নির্দল হয়ে মনোনয়ন জমা দেওয়ায় শোরগোল পড়ে যায় রাজনৈতিক মহলে। যদিও অবনী বাবু ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছিলেন। তবে তা নিয়েও বেশ জলঘোলা শুরু হয়েছিল। তবে মনোনয়ন তুলে নেওয়ায় যাদবপুরে বিজেপির স্বস্তি ফিরেছে।